চেন্নাই: কৈশোরের প্রেমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না। সম্প্রতি এই যুক্তিতে, যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত এক যুবকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা খারিজ করে দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ। গত ৪ নভেম্বর এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি এন আনন্দ ভেঙ্কটেশের একক বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, দুই কিশোর-কিশোরীর মধ্যে সম্মতিপূর্ণ সম্পর্কে শারীরিক সংযোগ এক স্বাভাবিক ক্রিয়া। আবেদনকারী যুবক এবং অভিযোগকারী যুবতী তাই করেছে। তাই, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪-ক (১) ধারা অনুযায়ী একে অপরাধ বলা যায় না।
অভিযোগকারী যুবতীর বয়স ১৯ বছর। আবেদনকারী যুবকে সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। যুবতীর অভিযোগ, একটি নির্জন জায়গায় তাঁরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় যুবকটি তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিল এবং চুম্বন করেছিল। পরবর্তীকালে আবেদনকারী যুবক তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এরপরই, ওই যুবতী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। যুবকের বিরুদ্ধে অবাঞ্ছিত যৌনতার অভিযোগ এনে, পুলিশ এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেছিল। তবে, আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ফৌজদারি অপরাধ গঠনের জন্য এই অভিযোগে প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাব রয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, দুই জনেই তাঁদের কিশোর বয়সে ছিলেন এবং স্বেচ্ছায় দেখা করেছিলেন ও একসঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন। বিচারপতি ভেঙ্কটেশ জানান, যে কাজগুলি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তাতে কোনও অপরাধমূলক অভিপ্রায় ধরা পড়েনি। বরং, এক তরুণ দম্পতির পরস্পরের প্রতি ভালবাসা প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন, “কিশোর বয়সের দুই ব্যক্তির, যাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে, তাদের একে অপরকে আলিঙ্গন করা বা চুম্বন করা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। এটাকে কোনোভাবেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪-ক(১)(১) ধারার অধীনে অপরাধ বলা যাবে না।” বিচারপতি ভেঙ্কটেশ আরও জানান, এই ধরনের মামলা গ্রহণ করলে, সম্মতিমূলক সম্পর্কে থাকা তরুণদের অযৌক্তিক কলঙ্কের সম্মুখীন হতে হতে পারে।
তার আগে অবশ্য এই মামলার বিষয়ে তদন্ত শেষ করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল পুলিশ। মামলাটি ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রমে তালুকাভুক্তও হয়েছিল। তবে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮২ ধারার অধীনে তার এক্তিয়ার প্রয়োগ করে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে হাইকোর্ট।