ভুবনেশ্বর: মোদী সরকারের প্রথম দুই মেয়াদে সরাসরি এনডিএ-র শরিক না হয়েও, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দল। রাজ্যসভায় বিজেপি তথা এনডিএ-র হাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংসদ ছিল না। এই অবস্থায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পাশ করানোর ক্ষেত্রে হোক, কিংবা রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে রাজ্যসভার সদস্য করার মতো বিষয়ে মোদী সরকারের পাশে থেকেছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচন ও ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে জোড়া পরাজয়ের পর একেবারেই উল্টো সুর নবীন বাবুর। এখন আর কোনও অবস্থাতেই তারা বিজেপিকে সমর্থন করবে না। বরং, ‘শক্তিশালী এবং প্রাণবন্ত বিরোধী’ দল হয়ে উঠবে। সোমবার (২৫ জুন) এক দলীয় বৈঠকে এমনটাই বলেছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন, ভুবনেশ্বরে বিজেডির নয় রাজ্যসভার সাংসদকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন নবীন পট্টনায়ক। বৈঠকের পর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈঠকে নবীন বলেছেন, এখন থেকে যে কোনও বিষয়ে কেন্দ্রকে দায়ী করবে বিজেডি। বিজেপিকে সমর্থনের প্রশ্নই আসে না। বিজেপিকে আর সমর্থন নয়, এখন থেকে শুধুমাত্র বিরোধিতা। রাজ্যের উন্নয়ন এবং ওড়িশার জনগণের কল্যাণ সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় রাজ্যসভায় তুলবেন দলীয় সাংসদরা। ওড়িশার অনেক ন্যায্য দাবিই মোদী সরকার পূরণ করেননি বলে জানিয়েছেন নবীন পট্টনায়ক। দলীয় সাংসদদের তিনি সংসদের অন্দরে ওড়িশার ৪.৫ কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার নির্দেশ দিয়েছেন।
মজার বিষয় হল, বিগত ১০ বছরে অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি আর নবীন পট্টনায়কের বিজেডির সমর্থন না পেলে, মোদী সরকারের আমলের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশই হত না। তিন তালাক, অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল, জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, সবই এই দুই দলের বাইরে থেকে দেওয়া সমর্থনে পাশ হয়েছে। এমনকি, অতি সম্প্রতি বিতর্কিত দিল্লি পরিষেবা বিল পাশ করাতেও সাহায্য করেছিল বিজেডি। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ করতে সাহায্য করেছিল। ভোট শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে, মার্চ মাসে জোট গড়ার আলোচনাতেও বসেছিল বিজেডি ও বিজেপি। সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। আর ভোটের পর, ক্ষমতা হারিয়েছেন নবীন পট্টনায়ক ও জগনমোহন রেড্ডি – দুজনেই।