নয়া দিল্লি: তাহলে কি কিছুটা হলেও সমস্যা মিটল পঞ্জাব কংগ্রেসে? অন্তত নভজ্যোৎ সিং সিধুর গলার সুর কিন্তু কিছুটা সেই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গতকালই দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল এবং হরিশ রাওয়াতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠকের থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে এবং দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে পঞ্জাব কংগ্রেস যে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা হয়ত এবার শেষ হতে চলেছে। নভজ্যোৎ সিং সিধুর সঙ্গে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের দ্বন্দ্ব। তার জেরে ক্যাপ্টেনের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা। তার কিছুদিন পর সিধুরও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদে ইস্তফা। এই সব নাটকীয়তার এবার হয়ত ইতি পড়তে চলেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
বৈঠক শেষে সিধু জানিয়েছেন, “আমি আমার উদ্বেগের কথা, দলের হাই কমান্ডের কাছে জানিয়েছি। আমার বিশ্বাস, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা পঞ্জাবের ভালর জন্যই হবে। আমি তাঁদের দলের সর্বোচ্চ পদাধিকারী বলে মনে করি এবং তাঁদের নির্দেশ মেনেই চলি।”
হঠাৎ করেই বিদ্রোহী সিধু নিজের অবস্থান থেকে পুরো একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, সিধুর সুর এখন এতটাই নরম যে তিনি যদি পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন, তাহলেও খুব একটা অবাক হওয়ার নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, “আগামিকালই সম্ভবত এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে ইস্তফার যে জেদ সিধু এতদিন ধরে করে আসছিলেন, সেই অবস্থান থেকে তিনিও সরে এসেছেন।”
উল্লেখ্য এর আগে পঞ্জাবের দায়িত্বে থাকা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হরিশ রাওয়াত বলেছিলেন,”নভজ্যোৎ সিং সিধিু এব চরণজিৎ চন্নির মধ্যে একই ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করছি। কিছু কিছু এমন জিনিস আছে, যাতে কিছুটা হলেও বেশি সময় লাগে।
আগামী বছরই পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই দলীয় কোন্দল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কংগ্রেস। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নভজ্য়োত সিং সিধুর সঙ্গে বিরোধ শুরু হয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের। চলতি বছরেই সিধুর নাম যখন পঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে উঠে আসে, সেই সময়ও তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন অমরিন্দর সিং। পরে শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সিধুকে সভাপতি হিসাবে মেনে নেন অমরিন্দর।
এদিকে, কংগ্রেস সভাপতির পদে দায়িত্ব পাওয়ার পরই সিধু অমরিন্দর সিংকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরাতে উঠে পড়ে লাগে। সিধু ঘনিষ্ঠ বিধায়করা বারংবার অমরিন্দরের ইস্তফার দাবি জানানোয়, শেষমেশ অপমানিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অমরিন্দর সিং। এরপরই তিনি দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনেছেন। সূত্রের খবর, তিনি নিজস্ব দল গড়তে পারেন। ইতিমধ্যেই একাধিক কংগ্রেস নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন।
আরও পড়ুন : Navjot Singh Sidhu: ফের দিল্লির দরবারে সিধু, নির্বাচন প্রস্তুতির শেষ পর্বেও কি তুলবেন নতুন কোনও ঝড়?