নয়া দিল্লি: গত শতাব্দীর সাতের দশকের গোড়ায় মধ্য প্রদেশের রেওয়া সৈনিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন দুজনেই। তারপর থেকে একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়েছেন তাঁরা। এমনকি, তাঁদের রোল নম্বরও ছিল কাছাকাছি। একজনের ছিল ৯৩১, আরেকজনের ৯৩৮। স্কুলের প্রথম দিন থেকেই তাঁদের নিজেদের মধ্যে ছিল প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। এবার, এই দুই সহপাঠী, দুই স্কুলের বন্ধু দায়িত্ব নিলেন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর দুই প্রধান শাখার। ভারতীয় সেনার প্রধান হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। আগেই নৌবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এই ঘটনা এই প্রথম। এর আগে, সেনা ও নৌবাহিনীর প্রধান পদে, দুই সহপাঠীকে কখনও দেখা যায়নি।
প্রতিরক্ষা বাহিনীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এবং অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠির বন্ধুত্বের কাহিনি যথেষ্ট চর্চিত। অনেক কর্তাই তা জানেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের পর দুজনে বরাবর ভিন্ন ভিন্ন বাহিনীতে ছিলেন। কিন্তু, তাতে বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি। দুই প্রতিরক্ষা কর্তার মধ্যে সব সময়ই যোগাযোগে ছিল। আর এবার তাঁরা সেনা ও নৌসেনা বাহিনীকে নেতৃত্ব দেবেন। সামরিক বাহিনীর দুই ঊর্ধ্বতন নেতার মধ্যে এই প্রগাঢ় বন্ধুত্ব, দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করবে বলে আশাবাদী প্রতিরক্ষা কর্তারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র, এ ভারত ভূষণ বাবু বলেছেন, “দুই অসাধারণ ছাত্র, যারা ৫০ বছর পর তাঁদের নিজ নিজ বাহিনীর নেতৃত্ব দেবেন, তাঁদের লালনপালনের বিরল সম্মান, মধ্যপ্রদেশের রেওয়া সৈনিক স্কুলের।”
গত ১ মে, ভারতীয় নৌবাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেছিলেন অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি। আর আজ রবিবার (৩০ জুন), নতুন পদের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ১৯৬৪ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেল বিভাগে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন তিনি নর্দার্ন আর্মি কমান্ডারের ভূমিকায় ছিলেন। বর্তমানে পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারতের দ্বিতীয় মাথাব্যথা হিসেবে উঠে এসেছে চিন। বিশেষ করে, গত কয়েক বছর ধরে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনের সঙ্গে ভারতের দ্বন্দ্ব চলছে। নর্দার্ন আর্মি কমান্ডার হিসেবে পূর্ব লাদাখের এই অস্থিরতার সঙ্গে যথেষ্ট পরিচিত লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ভারতীয় সেনা প্রধানের পদে, তাঁর সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।