নয়া দিল্লি: গত ২৫ অক্টোবরই, নয়া দিল্লির শহরতলী গৌতম বুদ্ধ নগরের কাসানা শিল্প এলাকার এক কারখানার ভিতর, মাদক তৈরির গবেষণাগারের সন্ধান পেয়েছিল দিল্লি পুলিশ ও এনসিবি। ওই প্রাঙ্গণ থেকে প্রায় ৯৫ কেজি কঠিন এবং তরল মেথামফেটামিন মাদক, বেশ কিছু মাদক তৈরির রাসায়নিক এবং বিদেশ থেকে আনা মাদক তৈরির যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এই ঘটনার তদন্তে সামনে এল চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। এই মাদক চক্রের সঙ্গে যোগ ছিল মেক্সিকোর মাদক চক্র, ‘কার্টেল দে জালিস্কো নুয়েভা জেনারেশন’-এর! প্রসঙ্গত, মেক্সিকোকে বলা হয় মাদক মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য। সময়ে সময়ে তাদের বিভিন্ন নিষ্ঠুর আচরণের খবরও পাওয়া যায়। এছাড়া, এই অবৈধ ব্যবসায় যুক্ত ছিল তিহার জেলের এক ওয়ার্ডেনও।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর), মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো বা এনসিবি জানিয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে দুই ব্যবসায়ী-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (অপারেশনস), ড.জ্ঞানেশ্বর সিং জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে এই চক্রের মূল পান্ডা দিল্লির এক ব্যবসায়ী। তাকে, এর আগে এক মাদক পাচারের মামলায় গ্রেফতার করেছিল রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ বা ডিআরআই। তাঁকে তিহার জেলে রাখা হয়েছিল। সেখানেই সে অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনের সংস্পর্শে এসেছিল। তিহার জেলের ওই ওয়ার্ডেন পরে ওই বেআইনি মাদক তৈরির গবেষণাগার, মেথামফেটামিন তৈরির প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সংগ্রহ এবং যন্ত্রপাতি আমদানিতে সহযোগিতা করেছিল।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের এক রসায়নবিদকে মাদক তৈরির কাজে লাগিয়েছিল চক্রটি। আর, দিল্লিতে বসবাসকারী ওই মেক্সিকান মাদক চক্রের এক সদস্য ওই মাদকের গুণমান পরীক্ষা করত। এই চারজন ছাড়া, এই মাদক চক্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল দিল্লির ওই ব্যবসায়ীর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীও। তাঁকে পশ্চিম দিল্লির রাজৌরি গার্ডেন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ড.জ্ঞানেশ্বর সিং আরও জানিয়েছেন, এই পাঁচজনের সঙ্গে আর কার কার যোগ ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন পথে টাকা এসেছে, তা ধরে ধরে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সনাক্ত করা হচ্ছে। এই মাদক শুধু ভারতে নয়, অন্যান্য দেশে রফতানির জন্য তৈরি করা হচ্ছিল বলে মনে করছে এনসিবি।
A clandestine Methamphetamine manufacturing Lab in Gautam Budh Nagar, busted with the arrest of 04 accused person by Special Cell (CI) in a joint operation with NCB.
95 Kgs of Methamphetamine along with other chemicals & imported machinery recovered@LtGovDelhi @DelhiPolice pic.twitter.com/Jkl4N9NFtH
— Special Cell, Delhi Police (@CellDelhi) October 29, 2024
তবে শুধু নয়া দিল্লিই নয়, চলতি বছরে গুজরাটের গান্ধীনগর এবং আমরেলি, রাজস্থানের যোধপুর এবং সিরোহি এবং মধ্য প্রদেশের ভোপালের শিল্পাঞ্চলেও একই ধরনের মাদক তৈরির গোপন গবেষণাগারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এনসিবি কর্তাদের মতে, বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই মাদক মাফিয়ারা শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের গোপন গবেষণাগার স্থাপন করছে। মেথামফেটামিন তৈরির জন্য যে সকল রাসায়নিক উপাদান লাগে, সেগুলি পুলিশের নজর এড়িয়ে শিল্পাঞ্চলে আনা অনেক সহজ। কারণ এই রাসায়নিকগুলির শিল্পাঞ্চলে ব্য়াপক ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া যন্ত্রপাতি, ল্যাবরেটরি থেকে উত্পন্ন বর্জ্য এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়াকরণের সময় চিমনি থেকে বেরিয়ে আসা বিষাক্ত ধোঁয়াও কোনও সন্দেহ তৈরি করে না।