নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষা কি পুনরায় দিতে হবে? নিট ইস্যুতে দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হওয়ার পর থেকেই এই প্রশ্নটা উঠছে। এবার এই নিয়ে বড় বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, যদি বৃহত্তরভাবে কোনও ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে। নিট ইস্যুতে ৪০টির বেশি আবেদনের শুনানি এদিন হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ারও আবেদন জমা পড়েছে। আর ওই আবেদন নিয়ে এদিন এই মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি ছাড়াও এই বেঞ্চে বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র রয়েছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি(NTA)-ও রয়েছে। তাদের বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন আদালতে নিট ইস্যুতে মামলা হয়েছে। সব মামলা যাতে সুপ্রিম কোর্টে শোনা হয়, সেই আবেদন জানিয়েছে তারা। তা না হলে মামলা দীর্ঘায়িত হবে বলে আশঙ্কা NTA-র।
এদিন মামলার শুনানির শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আদালতের রায়ের অপেক্ষা করছেন লাখ লাখ পরীক্ষার্থী। এর সামাজিক প্রভাব রয়েছে বলে নিট ইস্যুকে আমরা গুরুত্ব দেব।” এরপরই এক আবেদনকারী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পুরো পরীক্ষা বাতিল করা হোক। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনাকে দেখাতে হবে যে প্রশ্নফাঁস একটা সিস্টেমে হয়েছে। এর ফলে পুরো পরীক্ষা প্রভাবিত হয়েছে।” তারপরই তিন সদস্যের বেঞ্চ বলে, “আমরা যদি আপনার প্রস্তাব মেনে নিই যে প্রশ্ন ফাঁসের ফলে পরীক্ষা প্রভাবিত হয়েছে, তাহলে বলুন কোন পথে তদন্ত এগোবে।” পরীক্ষার ‘পবিত্রতা’ যদি বৃহত্তরভাবে নষ্ট হয়, তখনই শুধু পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টে এদিন কেন্দ্র জানিয়েছে, নিট পরীক্ষায় মেধাতালিকার প্রথম ১০০ জন ৯৫টি সেন্টারে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ১৮টি রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৬টি শহরে পড়েছিল তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্র। কেন্দ্র আরও জানায়, দেশের ৫৭১টি শহরে ৪ হাজার ৭৫০টি কেন্দ্রে নিট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
চিকিৎসক হওয়ার প্রথম ধাপ হল নিট। এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করলেই এমবিবিএস, বিডিএস কোর্সে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষা হয় গত ৫ মে। প্রায় ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন। ফল প্রকাশ হয় গত ৪ জুন। ফল প্রকাশের পরই থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০ নম্বরের পরীক্ষায় ৭২০-ই পান। আবার সময় নষ্ট হওয়ার কথা জানিয়ে ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেস নম্বর দেওয়া হয়। প্রশ্ন ফাঁসেরও অভিযোগ ওঠে। দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হয়। রাস্তায় নামে পরীক্ষার্থীরা। তদন্ত শুরু করে সিবিআই। একের পর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার কথা বলেছেন।