Rahul Gandhi: গণতন্ত্র সর্বনিম্নে পৌঁছনোর সাক্ষী থাকলাম আমরা, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে ‘ঐক্যবদ্ধ’ বিরোধীরা

Rahul Gandhi disqualified: এতদিন পর্যন্ত কোনও বিরোধী ঐক্য কোনওভাবেই দেখা যাচ্ছিল না। রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হতেই বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ জানালেন।

Rahul Gandhi: গণতন্ত্র সর্বনিম্নে পৌঁছনোর সাক্ষী থাকলাম আমরা, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে 'ঐক্যবদ্ধ' বিরোধীরা
রাহুল গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 24, 2023 | 5:17 PM

নয়া দিল্লি: কবিতার পঙক্তি অনুসরণ করে বলা যায়, মেলালেন তিনি মেলালেন। ভারত জোড়ো যাত্রা থেকে শুরু করে, গত কয়েক মাসে, বিরোধী ঐক্য গঠনে কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিরোধী দল উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু, কোনওভাবেই আঠা লাগানো যায়নি বিরোধী দলগুলির মধ্যে। কখনও বাম, ডিএমকে, এনসিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ দলগুলিকে একমঞ্চে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। কখনও, তৃণমূল কংগ্রেস সপা, বিজেডি, জেডি (এস)-এর মতো আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে কংগ্রেস-বঞ্চিত বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টা করেছে। কখনও আপ চেষ্টা করেছে অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এক মঞ্চে নিয়ে আসার। কোনওটিই সফল হয়নি। বিরোধীদের এই ‘টুকরে টুকরে’ অবস্থাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কিন্তু, শুক্রবার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হতেই সুরে সুর মিলে গেল বিরোধীদের। এক যোগে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বিরোধী নেতারা।

ইদানিং কংগ্রেসের সঙ্গে ক্রমে দূরত্ব বাড়ছে কংগ্রেসের। তবে রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হতেই, রাহুলের নাম না নিয়েই বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে মমতা বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর নয়া ভারতে বিরোধী নেতারা বিজেপির প্রধান নিশানায় পরিণত হয়েছে। যেখানে ফৌজদারি মামলা থাকা বিজেপি নেতাদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে তাঁদের বক্তৃতার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হচ্ছে বিরোধী নেতাদের। আজ আমরা গণতন্ত্রের এক নয়া নিম্নস্তরের সাক্ষী হলাম।” তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন, “গণতন্ত্র আর ভারত এখন এক বিপরীতধর্মী মত।”

মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, “এটা গণতন্ত্রের হত্যা। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র চাপের মুখে আছে। এটাই স্বৈরাচারের অবসানের শুরু। চোরকে চোর বলাটা অপরাধ হয়ে গিয়েছে।” শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইট করে বলেছেন, “সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক এবং লজ্জাজনক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অযোগ্যতার নোটিস আবারও প্রমাণ করল যে আমরা গণতন্ত্র খাঁচায় বন্দি।” মহা বিকাশ আগারির আরেক শরিক এনসিপি-র মুখপাত্র ক্লাইড ক্র্যাস্টো টুইট করে বলেছেন, “বিজেপির পতনের সূচনা হল। রাহুল গান্ধীই তাঁদের নেমেসিস হিসেবে প্রমাণিত হবেন। রাহুল গান্ধী ঈশ্বর আপনাকে কাছে আরও শক্তি দিন।”

কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে দ্বিধা রয়েছে সমাজবাদী পার্টিরও। সম্প্রতি কলকাতা সফরে এসে সপা প্রধান অখিলেশ যাদব, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহারের জন্য, বিজেপির সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসকেও দায়ী করেছিলেন। তিনিও এদিন রাহুলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে তাঁর দলের নেতা আজম খান এবং তাঁর ছেলের সঙ্গেও একই রকম ব্যবহার করা হয়েছে। অখিলেশ বলেছেন, “তারা আজম খান এবং তাঁর ছেলের মতো সপা নেতাদের সঙ্গেও একই কাজ করেছে। তারা মূল বিষয়গুলো থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছে।” ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি টুইট করেছেন, “রাহুল গান্ধীকে লোকসভা থেকে অযোগ্য ঘোষণা একটি প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ। এইভাবে তারা বিরোধীদের চুপ করাতে চায়। কিন্তু, আমাদের কণ্ঠস্বর ক্রমে আরও উঁচু হবে, এবং গণতন্ত্রের নীতিগুলিকে অসম্মানকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের বন্ধন আরও শক্তিশালী হবে। আমরা তাঁর (রাহুল গান্ধী) পাশে আছি।”

শেষ পর্যন্ত ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কতটা বিরোধী ঐক্য দেখা যাবে, সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু, এদিনের মতো অন্তত, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজই বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করল।