নয়া দিল্লি: বিশ্বের একাধিক দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে (Omicron Variant) আক্রান্তের খোঁজ মিলতেই বাড়ছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের এক বাসিন্দা, যিনি সম্প্রতিই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন, তিনি করোনা আক্রান্ত (COVID Positive) হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের (Foreign Travellers) উপর আরও কড়া নিয়ম আরোপ করা হল। নতুন ভ্য়ারিয়েন্টের সংক্রমণ রুখতে বিমানযাত্রীদের এই নিয়মগুলি মানতে হবে, সোমবার এমনটাই জানাল কেন্দ্র (Centre)।
গত সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) প্রথম খোঁজ মেলে করোনার এক নতুন ভ্যারিয়েন্টের। বি.১.১.৫২৯ হিসাবে চিহ্নিত এই ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(World Health Organization)-র তরফে নাম দেওয়া হয়েছে ওমিক্রন(Omicron)। কমপক্ষে ৩০ বার অভিযোজিত এই ভ্য়ারিয়েন্টকে “উদ্বেগের কারণ” (Variant of Concern) হিসাবেও চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মনে করা হচ্ছে, একাধিকবার অভিযোজন বা মিউটেশন হওয়ায় এই ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার থেকেও বেশি সংক্রামক হতে পারে।
দেশে ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের প্রবেশ রুখতে এ দিন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশ থেকে আগত প্রত্যেক যাত্রীকেই আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। একইসঙ্গে একটি স্ব-ঘোষণা পত্র (self-declaration form) পূরণ করতে হবে। যদি এই দুটি শর্ত পূরণ না করেন, তবে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হবে, দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, “ঝুঁকিপূর্ণ দেশ” (High Risk Countries) অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা, ইজরায়েল, হংকং সহ যে দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছে, সেই সমস্ত দেশগুলি থেকে যাত্রীরা এলে তাদের ভারতে পৌঁছনোর পরও ফের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা (RT-PCR Test) করাতে হবে। যদি কারোর রিপোর্ট পজেটিভ আসে, তবে তাদের একান্তবাসে পাঠানো হবে এবং নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য় পাঠানো হবে। যদি কোনও ব্যক্তির জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের রিপোর্টে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে, তবে আরও কঠোর নিয়ম জারি করা হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মধ্য়ে যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, তাদেরও সাতদিনের জন্য একান্তবাসে থাকতে হবে। অষ্টমদিনে তাদের ফের করোনা পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও, ঝুঁকিপূর্ণ নয়, এমন দেশ থেকে আগত যাত্রীদেরও প্রয়োজন অনুসারে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হবে। এদের মধ্যে কোনও যাত্রীর রিপোর্ট পজেটিভ এলে, তাকেও একান্তবাসে (Quarantine) পাঠানো হবে এবং নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, তাদেরও কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য স্বাস্থ্যের দিকে কড়া নজর রাখতে হবে।
গতকালই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে রাজ্যগুলিতে সতর্ক করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক যাত্রীদের উপর কড়া নজরদারি, করোনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি, সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল বা হটস্পটগুলির উপর নজরদারি, দ্রুত জিনোম সিকোয়েন্সিংযের জন্য নমুনা পাঠানো ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা চালু করার যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল, তাতে ফের লাগাম পরাতে পারে কেন্দ্র। করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রনের হদিশ মিলতেই ফের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। শনিবার করোনা পর্যালোচনা বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।