নয়া দিল্লি: চাকরি ছাড়ছেন বা অন্য কোনও চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন? অনেক সময়ই সংস্থার তরফে বলা হয় যে, কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ দিন লেগে যাবে সম্পূর্ণ সেটেলমেন্ট করতে। তবে চিন্তা নেই, শীঘ্রই বদলে যাচ্ছে কাজের পদ্ধতি। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পরিবর্তন করা হচ্ছে শ্রমবিধিতে। নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, অফিসে কর্মীদের শেষ দিন যেদিন হবে, তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কর্মীর যাবতীয় অ্যাকাউন্টের সেটেলমেন্ট করে দিতে হবে। কর্মীরা ইস্তফাই দিক বা তাদের কাজ থেকে বরখাস্ত করা হোক, তাদের কাজের শেষদিন যেদিন হবে, তার দুই দিনের মধ্যেই কর্মীর যাবতীয় পাওনা-গণ্ডা মিটিয়ে দিতে হবে।
বর্তমানে কাজ ছাড়ার ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বেতন ও বাকি পাওনার হিসাব মিটিয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় তা ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাস অবধি পৌঁছতে পারে। যদি ওই ব্যক্তি অন্য কোনও কাজে যোগ না দেন, তবে ওই দুই-তিন মাস সঞ্চিত অর্থ খরচ করেই দিন গুজরান করতে হয়। যদি কারোর কাছে সঞ্চয় না থাকে, তবে তো আরওই সমস্যা। তবে এই আর্থিক সঙ্কটের মুখে আর বেশিদিন পড়তে হবে না কর্মীদের। কেন্দ্রের নতুন শ্রমবিধি আইনে যাবতীয় সেটেলমেন্ট কাজের শেষদিনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
সংসদে ইতিমধ্যেই পাশ হয়ে গিয়েছে নতুন শ্রম আইন। বেতন, সামাজিক সুরক্ষা, কর্মী-কর্তৃপক্ষ সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের ধরনে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন শ্রম আইনের অধীনে বেতনের হিসাবেও পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনও কর্মীকে কাজ থেকে বিতাড়িত করা হয় বা তিনি যদি ইস্তফা দেন বা সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়েন, তবে পরবর্তী দুই দিনের মধ্যেই তার যাবতীয় পাওনা-গণ্ডা মিটিয়ে দিতে হবে। আগামী ১ জুলাই থেকেই এই নতুন শ্রম আইন কার্যকর হবে। তবে বেশ কয়েকটি রাজ্যের তরফে এই আইন সংশোধনেরও আবেদন জানানো হয়েছে।
এর আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি লোকসভায় লিখিত জবাবে জানিয়েছিলেন যে ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নতুন বেতনের নিয়মে সম্মতি জানিয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, নতুন শ্রম আইনের অধীনে বকেয়া বেতন ও পাওনা-গণ্ডা মেটানোর জন্য রাজ্য সরকার যে সময়সীমাকে উপযুক্ত বলে মনে করবে, তাও কার্যকর করা হতে পারে।
নতুন শ্রম আইনে কর্মীদের কাজের সময়সীমা ৮-৯ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কর্মীদের সপ্তাহে তিনদিন ছুটি দেওয়া হবে। দৈনিক কাজের সময়সীমার পরিবর্তন হলেও, সাপ্তাহিক কাজের সময়সীমায় কোনও পরিবর্তন হবে না। সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টাই কাজের সময়সীমা বাধা থাকছে।
অন্যদিকে বেতনেও আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। নতুন শ্রম আইনের অধীনে মাসিক বেতনের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ বেসিক বেতন হতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এরফলে কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে জমা অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলেই জানানো হয়েছে। তবে বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে বেসিক বেতন অনেকটাই কমে যাবে।