নয়ডা: পুজোর আনন্দে ম্লান হয়ে যায়নি আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। বরং, যত সময় যাচ্ছে ততই ঝাঁঝ বাড়ছে আন্দোলনের। আরজি করের ঘটনার প্রায় একই সময়ে আরও এক জঘন্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মহারাষ্ট্রর বদলাপুর। স্কুলে দুই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল স্কুলেরই এক পরিচারকের বিরুদ্ধে। বদলাপুরের সেই প্রতিবাদেও ভারতের ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। এবার, তিন বছরের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল নয়ডায়। গত সপ্তাহে, নয়ডার এক বেসরকারি স্কুলের প্রাঙ্গনে ওই নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করেছে স্কুলেরই এক হাউসকিপিং স্টাফ বলে অভিযোগ। তাকে ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ৯ অক্টোবর। অভিযুক্ত ব্যক্তি নিঠারি গ্রামের বাসিন্দা। ওই বেসরকারি স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে। তবে, তার নজর স্কুলের সব জায়গায় পড়ে না। অভিযুক্ত ব্যক্তি, ওই নাবালিকাকে সেই রকমই এক জায়গায় নিয়ে গিয়ে, তাকে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ। মাত্র কয়েক মাস আগেই চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল অভিযুক্ত কর্মীকে।
৩ বছরের শিশু। প্রথমে সে কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু, তার আচরণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন তার বাবা-মা। সে জানিয়েছিল, তার তলপেটে ব্যথা হচ্ছে। তার বাবা-মা জানিয়েছে, হঠাৎ করেই তাঁদের মেয়ে অস্বাভাবিক রকমের শান্ত হয়ে গিয়েছিল। খেলাধুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। বাবা-মা শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ডাক্তার দেখেছিলেন, তাঁর গোপনাঙ্গে আঘাত রয়েছে। বাবা-মাকে ডাক্তার বলেন, শিশুটি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকতে পারে। পরে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বাবা-মা। সে জানায়, স্কুলে খাবারের প্লেট দিচ্ছিল যে ব্যক্তি, সেই তার গোপনাঙ্গে কিছু একটা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তার খুব ব্যথা লেগেছিল।
মেয়ের কাছ থেকে এই ভয়ঙ্কর খবর জানার পরই, ১০ অক্টোবর নয়ডার ২০ ম্বর সেক্টর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির বাবা-মা। ওইদিনই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোন ত্রুটি ছিল কিনা, সেই বিষয়ে স্কুল প্রশাসনকে প্রশ্ন করা হচ্ছে। ডিসিপি নয়ডা, রামবদন সিং জানিয়েছেন, অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৫-র ২ ধারা এবং যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানের অধীনে মামলা করা হয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষর দাবি, “স্কুলে যে ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তাতে এই ঘটনা ঘটা অসম্ভব। এখনও পর্যন্ত পুলিশও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে কোনও প্রমাণ পায়নি।” তবে, ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে তারা। পুলিশের তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।