নয়ডা: আবাসিক এলাকায় স্কুটি চালাতে চালাতে অশ্লীল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিলেন এক পুরুষ ও মহিলা। এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন স্থানীয় এক যুবক। সেই প্রতিবাদের বড় মূল্য চোকাতে হল তাঁকে। বেধড়ক মারধরের চোটে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল তাঁকে। একদিন পরে, চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্য়েই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার, উত্তর প্রদেশের নয়ডার সাহিবাদ থানা এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বযাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বিরাট মিশ্র। তিনি সাহিবাদ সবজি বাজারে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। সন্ধ্যায় স্থানীয় এক জিমে প্রশিক্ষকের কাজও করতেন। শনিবার বিকেলে এলআর কলেজের কাছে মণীশ কুমার নামে এক যুবককে স্কুটিতে এক মহিলার সঙ্গে অত্যন্ত আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছিলেন বিরাট। ঘটনার প্রতিবাদ করতেই মণীশ দলবল নিয়ে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পুরো ঘটনার সাক্ষী বান্টি কুমার নামে এক পথচারী। তিনিই মণীষের নামে পুলিশে অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন।
বান্টি কুমার বলেছেন, “এক মহিলাকে নিয়ে স্কুটি চালিয়ে যাচ্ছিল মণীশ কুমার। স্কুটি চালাতে চালাতেই তারা অত্যন্ত অশ্লীল কাজকর্ম করছিল। তা দেখে, বিরাট মিশ্র আপত্তি জানান এবং মণীশ কুমারকে অন্য কোথাও গিয়ে এই সব করতে বলেছিলেন। আরও বলেছিলেন, আবাসিক এলাকায় আর যেন সে এই ধরনের কাজ না করে। এরপরই মণীশ কুমার তার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে এলাকায় ডেকে আনে এবং বিরাট মিশ্রকে লাঠি ও ইট দিয়ে মারধর করে। আমি বিরাট মিশ্রকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ওরা আমাকেও বেধড়ক মারধর করে। পরে, তারা বিরাটকে ওই অবস্থায় ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।”
এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় বিরাট মিশ্রকে দ্রুত গাজিয়াবাদের এক স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পরে দিল্লির এক হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার গভীর রাতে সেই হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। নিহত বিরাটের বাবা সুদামা মিশ্র বলেছেন, “আমার ছেলেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল। ওরা আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেছে। ওদের বাইকের সাইলেন্সারও বের করে মাথায় আঘাত করেছে।”
শনিবার সাহিবাদ পুলিশ, দোষীদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা করা, স্বেচ্ছায় আঘাত করা, খুনের চেষ্টা, ভীতি প্রদর্শন, বেআইনি জমায়েতের মতো ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ ধারায় এফআইআর দায়ের করেছিল। বিরাট মিশ্রের মৃত্যুর পর, হত্যার চেষ্টার পরিবর্তে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে। মণীশ কুমারের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে মণীশ যাদব, গৌরব কাসানা, আকাশ কুমার, পঙ্কজ সিং এবং বিপুল কুমারকে।