নয়ডা: নিত্য়দিনের মতোই সকালে হাঁটতে বের হয়েছিলেন, হঠাৎ চোখে পড়েছিল রাস্তার ধারে ফাঁকা জমিতে ভিড় জমিয়েছে অনেকগুলো পথকুকুর। কিছু একটা টেনে হিঁচড়ে খাচ্ছে তাঁরা। কী রয়েছে সেখানে, তা দেখার জন্য উকি মারতেই আঁতকে উঠলেন পথচারীরা। দেখতে পেলেন জমিতে পড়ে রয়েছে এক মহিলার দেহ। প্রায় মাটিতে মিশে যেতে বসেছে সেই দেহ। মাটি খুঁড়ে সেই দেহই টেনে হিচড়ে বের করে কামড়ে খাচ্ছে কুকুর। শুক্রবার গ্রেটার নয়ডার একটি ফাঁকা জমি থেকে উদ্ধার হয় এক যুবতীর দেহ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, দিন পনেরো আগেই ওই যুবতীর ভাই পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। পণের দাবিতে ওই যুবতীর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁকে খুন করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৫ মার্চ ওই যুবতীর ভাই নরেন্দ্র ভাটির অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তও শুরু করা হয়। ওই যুবকের দাবি ছিল, পণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর দিদির উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছিল তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। কিন্তু বিয়ের ৭ বছর পার হয়ে যাওয়ায় পণের দাবিতে খুনের অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার সকালে গ্রেটার নয়ডার সেক্টর ১৫৫ থেকে সরিতা নামক (২৬) যুবতীর দেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে ওই যুবতীর দেহ দেখতে পান। মাটির মধ্যে অর্ধেক পোঁতা ছিল যুবতীর দেহ, তার কাপড় প্রথমে চোখে পড়ে। কুকুর ছিড়ে খাচ্ছিল ওই যুবতীর দেহ। আগেরদিন রাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় মাটিতে পোঁতা ওই দেহ উঠে এসেছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। যুবতীর দেহ উদ্ধারের পরই ফরেন্সিক দল আনা হয়। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গত ১৫ মার্চ যুবতীর ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারা (অপহরণ), ৪৯৮এ (স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দ্বারা নির্যাতন) ও পণের দাবিতে অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করা হয়। মৃতার স্বামী ও তাঁর ছয় আত্মীয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মৃতার পরিবারের দাবি, ২০১৫ সালে যখন সরিতার সঙ্গে যোগীন্দর নামক এক ব্যক্তির বিয়ে হয়, তখন ১০ লক্ষ টাকা পণ ও মোটরবাইক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পরও ক্রমাগত পণের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। এর আগে ২০২১ সালেও পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও, পরে তা মিটমাট করে নেওয়া হয়।