রায়পুর: শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশ। রোজই কিছু না কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। তারই মধ্যে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর), ওড়িশা থেকে আরও এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের খবর উঠে এল, যার সঙ্গে অদ্ভুত মিল রয়েছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের। প্রেমিকাকে হত্যা করে, তাঁর দেহ পুড়িয়ে দিয়ে জঙ্গলে ফেলে আসার অভিযোগে এদিন এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ছত্তীসগঢ় পুলিশ। ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিকার অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহেই সে তাঁকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সচিন আগরওয়াল, ওড়িশার বলাঙ্গিরের বাসিন্দা। তাঁর প্রেমিকা ছিলেন তনু কুরে, ছত্তীসগঢ়ের কোরবা জেলার বাসিন্দা। পুলিশি জেরার মুখে সচিন জানিয়েছে, অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক আছে সন্দেহেই সে তনুকে হত্যা করেছে। সে জানিয়েছে, গত ২১ নভেম্বর সে তনুকে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর থেকে বলাঙ্গিরে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর, প্রথমে তাঁকে গুলি করেছিল সে। হত্যার পর, প্রেমিকার দেহ সে ২০০ কিলোমিটার দূরে এক জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর, জঙ্গলের মধ্যেই পেট্রোল ঢেলে সেই দেহ পুড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল সে।
এছাড়া হত্যার পর, তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিল সচিন। যাতে তাঁরা টের না পান যে, তনু আর বেঁচে নেই। তনুর পরিবারকে তিনি আরও বলেছিলেন, তাঁরা যেন আর তাদের খোঁজ না করে। ছত্তিশগড় পুলিশ জানিয়েছে সেই সময় সচিন বারবার তাঁর অবস্থানও পরিবর্তন করছিল। কিন্তু, তার অপরাধ চাপা থাকেনি। দীর্ঘদিন তনুর কোনও সন্ধান না পেয়ে, তাঁর আত্মীয়রা রায়পুরের পান্ডরী থানায় একটি নিখোঁজে ব্যক্তির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ছত্তীসগঢ় পুলিশ ওড়িশা পুলিশকে অনুরোধ বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছিল।
এরপর ওই জঙ্গল এলাকা থেকে একটি অর্ধ-দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই দেহের ছবি পাঠানো হয় তনুর পরিবারের সদস্যদের। তাঁরা সেই ছবি দেখে দেহটি তনুর বলে সনাক্ত করে। এরপরই ওড়িশা পুলিশ সচিনকে গ্রেফতার করে। তাকে রায়পুরে ছত্তিশগড় পুলিশের হাতে তুলে দেবে ওড়িশা পুলিশ। তার আগে আপাতত তারা এই বিষয়ে একটি শূন্য এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।