ভুবনেশ্বর: ওড়িশার বালেশ্বরে গত শুক্রবার রাতে যে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তের ভার সিবিআই-কে দেওয়ার সুপারিশ করল রেলওয়ে বোর্ড। রবিবার (৪ জুন), এই খবর জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এদিন সন্ধ্যায় ভুবনেশ্বরের রেল সদনে এই দুর্ঘটনার বিষয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন রেলমন্ত্রী। সেখানেই এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের খবর জানান তিনি। এর আগে ২০১০ সালে, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের নাশকতার ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার, বালেশ্বরের ঘটনারও সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করা হল। রেলমন্ত্রী বলেন, “এই ঘটনার গুরুত্ব মাথায় রেখে এবং প্রশাসনের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তার ভিত্তিতে রেলওয়ে বোর্ড এই মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করার সুপারিশ করেছে।”
রবিবার সকালে, এই দুর্ঘটনার পিছনে চালকের কোনও ত্রুটি থাকা বা রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থায় সিস্টেমের ত্রুটি থাকার সম্ভাবনা কার্যত খারিজ করে দেওয়া হয় রেলওয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে। ওড়িশার এই ভয়ানক ট্রেন দুর্ঘটনার পিছনে ‘নাশকতা’ রয়েছে বা ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমে কেউ কারসাজি করেছে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, রেলের প্রাথমিক তদন্তে দুর্ঘটনার ‘মূল কারণ’ এবং এর জন্য দায়ী ‘অপরাধীদের’ চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, “ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিং এবং পয়েন্ট মেশিনে করা পরিবর্তনের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
রেলওয়ে বোর্ডের কর্তারা দাবি করেছেন, ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমটিতে কোনও ত্রুটি থাকতেই পারে না। এটি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ। করমন্ডল এক্সপ্রেসের চালককেও তারা ক্লিন চিট দিয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, সবুজ সঙ্কেত দেখেই তিনি এগিয়েছিলেন এবং ট্রেনটি অতিরিক্ত গতিতেও ছিল না। এই ক্ষেত্রে বাইরের কারও হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি রেলওয়ে বোর্ড। তারা জানিয়েছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে বাহানাগা বাজার স্টেশনে মেইন লাইন দিয়ে যাওয়া জন্য সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ট্রেনটি মেইন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকেছিল। সেখানে একটি লৌহ আকর বোঝাই পণ্যবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। মালগাড়িটির সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রেনটির অধিকাংশ কামরা লাইনচ্যুত হয়েছিল এবং ট্রেনটির ইঞ্জিন মালগাড়িটির উপরে উঠে গিয়েছিল। তার বগি ছিটকে পড়েছিল তৃতীয় লাইনে। ওই লাইন দিয়ে উল্টোদিক থেকে বেঙ্গালুরু হাওড়া সুপারপাস্ট ট্রেন আসছিল। সেটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের কামরার।