নয়া দিল্লি: পদত্যাগ করার পর বিচারপতিরা যা বলেন তা শুধুমাত্র তাদের মতামত। আদালতের নির্দেশ নয়। মঙ্গলবার (৮ অগস্ট) বলেছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সম্পর্কে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ রঞ্জন গগৈয়ের মন্তব্য সম্পর্কে তিনি সুপ্রিম কোর্টে এই মন্তব্য করেন। সোমবার, রাজ্যসভায় দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল সরকার (সংশোধনী) বিল, ২০২৩-এর উপর বিতর্ক ছিল। বিতর্কে অংশ নেন রঞ্জন গগৈ। তিনি জানান, কেশবানন্দ ভারতী মামলাযর বিষয়ে প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল অন্ধারুজিনার একটি বই লিখেছিলেন। সেই বইয়ের ভিত্তিতে তিনি মনে করেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ভিত্তিটি আইনশাস্ত্রগতভাবে অত্যন্ত বিতর্কিত। মঙ্গলবার, সুপ্রিম কোর্টে প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন রাজ্যসভার সদস্য তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কবিল সিবল।
সুপ্রিম কোর্টে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলার শুনানি চলছে। আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবী কপিল সিবল বলেন, যে প্রক্রিয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে কেন্দ্র, তা কোনওভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। তবে যদি, কোনও নতুন আইনশাস্ত্র আনা হয়, তাহলে তা করতে কোনও অসুবিধা নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তারা যা খুশি তা করতে পারে। এরপরই তিনি জানান, প্রধান বিচারপতির এক সহকর্মী সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, কপিল সিবল যে সহকর্মীর কথা বলছেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত। এরপরই তিনি জানান, বিচারপতির আসন থেকে সরে যাওয়ার পর তাঁদের সকল বক্তব্য শুধুমাত্র তাঁদের মতামত। সেগুলি আদালতের আদেশ নয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর মতবাদকে ‘গাইডিং স্টার’ বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আইনগত কোনও জটিলতা তৈরি হলে, এই মৌলিক কাঠামোই সংবিধানের ব্যাখ্যাকারী এবং প্রয়োগকারীদের দিকনির্দেশ দেয়। ১৯৭৩ সালে কেশভানন্দ ভারতী মামলার রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা নিয়েছে। এই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সংসদ সংবিধানের সংসোধন করতে পারে। কিন্তু, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং আইনের শাসনের মতো কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। সেগুলি সংশোধনের অধিকার নেই সংসদের।