No confidence motion: ২০ বছর পর ফের লোকসভায় আস্থাভোট, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের কৌশল ‘ইন্ডিয়া’র
No confidence motion against Modi govt: ২০ বছর পর, ভারতের নির্বাচিত কোনও সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে বিরোধী পক্ষ। এর আগে, ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে শেষবার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল।

নয়া দিল্লি: মণিপুর হিংসা নিয়ে সংসদে সীমাহীন সময়ের জন্য আলোচনার দাবিতে, মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতে, লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স। সূত্রের খবর, এই বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছেন আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডা। প্রসঙ্গত, ২০ বছর পর, ভারতের নির্বাচিত কোনও সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে বিরোধী পক্ষ। এর আগে, ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে শেষবার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। মণিপুর হিংসা নিয়ে সংসদের ভিতরে বিরোধী বনাম সরকারের চলমান দ্বন্দ্বের মধ্যে, মঙ্গলবার সকালে সংসদে তাদের পরবর্তী কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধী দলগুলির সংসদীয় নেতারা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের কার্যালয়ে এক বৈঠক করেন। সেখানেই লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, প্রমোদ তিওয়ারি, আম আদমি পার্টির রাঘব চাড্ডা, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন প্রমুখ। সূত্র মতে, অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিষয়ে ইন্ডিয়া জোটের সবকটি দল একমত হয়েছে। হিংসা-ধ্বস্ত মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কীভাবে কথা বলতে বাধ্য করা যায়, সেই বিষয়ে বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে আলোচনার পরই, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিরোধীরা মনে করছে, এই বিষয়ে সরকারকে আলোচনা শুরু করতে বাধ্য করার জন্য এটি একটি কার্যকর উপায়। তবে শুধু লোকসভাতেই নয়, মণিপুর ইস্যুতে রাজ্যসভার বিজেপি সরকারকে কীভাবে কোণঠাসা করা যায়, তারও কৌশল নির্ধারণ করছে বিরোধী দলগুলি। উল্লেখ্য, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিশদ আলোচনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করেছে। ২০ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে। তারপর থেকে লোকসভা এবং রাজ্যসভা উত্তাল হয়েছে বিরোধীদের প্রতিবাদ এবং স্লোগানে।
এই বিষয়ে সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী জানিয়েছেন, বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আনুক। তাতে সরকারের কোনও দুশ্চিন্তা নেই। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যা আছে। বস্তুত, বিরোধী সাংসদরা-সহ গোটা দেশ জানে, লোকসভায় এনডিএ-র যা সাংসদ সংখ্যা রয়েছে, তাতে অনাস্থা প্রস্তাব এনে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আসন টলানোর ক্ষমতা নেই বিরোধীদের। আসলে এই প্রস্তাব আনার পিছনে বিরোধীদের লক্ষ্য, সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখতে বাধ্য করা। কোনও সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলে, ভোটাভুটির আগে সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সরকারের প্রধান সেই প্রস্তাবের জবাব দেন।
২০০৩ সালে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজকে ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। বাজপেয়ীর পক্ষে সংখ্যা থাকলেও, ওই অনাস্থা প্রস্তাবকে বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছিল। ভোটাভুটিতে সহজ জয় পেয়েছিল সরকার। এনডিএ ভোট পেয়েছিল ৩১২ এবং বিরোধীরা পেয়েছিল ১৮৬টি। এআইএডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্স ভোটদানে বিরত ছিল। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ২০১৮ সালে, মোদী সরকারের অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল ওয়াইএসআর কংগ্রেস। তবে, শেষ পর্যন্ত সভার কার্যক্রমে বারবার বিঘ্ন ঘটায় সেই প্রস্তাবল গ্রহণ করা যায়নি।





