নয়া দিল্লি: বিশেষ অধিবেশন (Special Session of Parliament) ডেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর অবধি এই অধিবেশন চলবে। তবে কী নিয়ে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশাই রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জল্পনা, “এক দেশ, এক নির্বাচন” বিল পেশ করা হতে পারে এই অধিবেশনে। মঙ্গলবার জি-২০ আমন্ত্রণ পত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’র বদলে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’ লেখা থাকার কারণে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে যে দেশের নাম ইন্ডিয়ার বদলে ভারত রাখতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। আসন্ন অধিবেশনে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার কী অবস্থান হবে, তা নিয়েই বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখবেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা চাইছে বিরোধী দলগুলি, তা তুলে ধরবেন ওই চিঠিতে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের বাসভবনে আয়োজন করা হয়েছিল বিশেষ নৈশভোজ ও বৈঠকের। ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ইন্ডিয়া জোটের সংসদীয় দলের নেতারা। দীর্ঘক্ষণ তাদের মধ্যে আলোচনা চলে। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার সকলকে অন্ধকারে রেখে অধিবেশন ডেকেছে। কী নিয়ে আলোচনা হবে বিশেষ অধিবেশনে, তাও জানানো হচ্ছে না।
বিরোধীদের অভিযোগ, ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পেয়েছে সরকার। প্রচারের আলো থেকে ইন্ডিয়া জোটকে সরাতেই ভারত নাম নিয়ে মাতামাতি করছে কেন্দ্র। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই বক্তব্য পাল্টা প্রচারে তুলে ধরবে বিরোধীরা।
সূত্রের খবর, আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে বিরোধী জোটের স্ট্রাটেজি কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয় বিরোধী জোটের সাংসদদের মধ্যে। এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বিরোধীদের দাবিগুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা হবে। এই চিঠি লেখার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সনিয়া গান্ধীকে।
জানা গিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, চিনা আগ্রাসন, মণিপুরে হিংসা সহ বিভিন্ন ইস্যু, যা বাদল অধিবেশনে উত্থাপন করা হয়েছিল, সেই ইস্যুগুলি নিয়েই সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আলোচনা চায় কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল। এই ইস্যুগুলিতে আলোচনার দাবি জানিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখবেন সনিয়া গান্ধী।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রস্তাবনা পর্যালোচনার জন্য কেন্দ্রের গঠন করা কমিটিতে প্রধান হিসাবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে মনোনীত করা নিয়েও আপত্তি তুলেছে ইন্ডিয়া জোট। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে লোকসভার সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়া জোট।
এদিকে, কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৌ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “বিজেপি নিজেই বলতে পারছে না কী কারণে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। বিজেপি গোটা দেশকে অন্ধকারে রেখেছে। সরকার দেশের প্রতি স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল নয়”। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেও টুইট করে বলেন, “কোনও কারণ ছাড়াই মোদী সরকার প্রথমবার বিশেষ অধিবেশন ডাকল। বিরোধী দলের কাউকে এই বিষয়ে অবগত করা হয়নি। এভাবে গণতন্ত্র চলে না।”