নয়া দিল্লি: ৭ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা অধিবেশন। প্রথম থেকেই বিরোধীরা একাধিক ইস্যুতে সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে। উত্তপ্ত হয়েছে সংসদের দুই কক্ষই। এবং মুলতুবিও হয়েছে একাধিকবার। এবার মঙ্গলবার ফের একবার উত্তপ্ত হতে চলেছে সংসদের অধিবেশন। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরবার ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘর্ষ নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।
তাওয়াং সেক্টরে ভারত-চিন সংঘর্ষ নিয়ে সরকারের বিবৃতি চেয়ে সংসদে মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করেছে বিরোধীরা। এদিন ভারত-চিন সীমান্ত ইস্যু নিয়ে লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এদিকে রাজ্য সভায় ২৬৭ নং নিয়মের অধীনে চিনা-ভারত সংঘর্ষ নিয়ে সরকারের তরফে বিবৃতি চেয়ে নোটিস জারি করেছে তৃণমূল সাংসদ । এদিকে কংগ্রেসের হয়ে সাংসদ মণীশ তিওয়ারি মুলতুবি প্রস্তাব জমা দেন। একই ইস্যুতে রাজ্যসভায় ১৭৬ নং নিয়মের অধীনে অল্প সময়ের জন্য আলোচনার জন্য নোটিস জমা দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন। রাজ্যসভায় তাওয়াঙে ইন্দো-চিন সংঘর্ষ নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করেছেন আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চাড্ডা ও কংগ্রেস সাংসদ শক্তি সিং গোহিল।
উল্লেখ্য, গতকাল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ৯ ডিসেম্বর গত শুক্রবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে সংঘর্ষ বাঁধে ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে। এই সংঘাতের জেরে ভারতীয় সেনা ও চিনা সেনার বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। এই আবহে সংসদে এই ইস্যু নিয়ে সুর চড়াল বিরোধীরা। এর আভাস গতকালই মিলেছিল। গতকাল এই সংঘর্ষ প্রসঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে একটি টুইটে লেখেন, ‘আবারও আমাদের ভারতীয় সেনাদের উস্কানি দিয়েছে চিনের সেনারা। আমাদের সেনা জওয়ানরা দৃঢ়ভাবে লড়াই করেছেন এবং তাঁদের মধ্যে কয়েকজন জখম হয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে আমরা দেশের সঙ্গে রয়েছি। এটা নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না।’ তিনি টুইটে আরও লেখেন, ‘চিনা সেনার সীমা লঙ্ঘন নিয়ে আসল তথ্য প্রকাশ করা উচিত মোদী সরকারের। পাশাপাশি, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখার কাছে চিন যেসব নির্মাণ কাজ করেছে, সেই বিষয়ে সৎ হওয়া উচিত মোদী সরকারের। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনা করে সরকারের উচিত জাতির আস্থা অর্জন করা। আমরা আমাদের সেনাদের মূল্য এবং আত্মত্যাগের জন্য চিরকাল ঋণী থাকব।’
এদিকে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে টুইট করেছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও। তিনি টুইটে লেখেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বে আমরা গর্বিত। সীমান্তে চিনের পদক্ষেপ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। গত দুই বছর ধরে আমরা বারবার সরকারকে জাগানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু মোদী সরকার শুধুমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বাঁচাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই কারণেই বাড়ছে চিনের সাহস।’