মুম্বই: মোটা টাকার বেতন, উচু পদ, কোনও কিছু দিয়েই সংস্থায় থাকতে বাধ্য করা যাচ্ছে না কর্মীদের। সংস্থার একটা সিদ্ধান্তেই ক্ষেপে কর্মচারীরা দিতে শুরু করেছে ইস্তফা। বিগত দুই মাসে ৮০০-রও বেশি কর্মচারী ইস্তফা (Resignation) দিলেন হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র (WhiteHat Juniors) সংস্থা থেকে। কী কারণে জানেন? কর্মচারীদের অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। একটি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে সমস্ত কর্মীদেরই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম'(Work From Home) করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতিই সংস্থার কর্মীদের অফিসে ফেরত আসতে বলা হয়। এরপরই ইস্তফা দেন কর্মীরা। ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসাবে তাঁরা জানিয়েছেন, বাড়িতেই কাজ করতে স্বচ্ছন্দ তাঁরা। আর অফিসে ফিরতে চান না।
হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র, যা বাচ্চাদের অনলাইনে কোডিং শেখার একটি অ্যাপ, তাকে ২০২০ সালেই অধিগ্রহণ করে আরেকটি শিক্ষামূলক সংস্থা বাইজু(Byju)। ৩০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রকে কিনে নেয় বাইজু। জানা গিয়েছে, গত ১৮ মার্চ সংস্থার তরফে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যেমন, মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও গুরুগ্রামে কর্মরত কর্মীদের অফিসে ফিরতে বলা হয়। এক মাসের মধ্যে সমস্ত কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়। তবে কর্মীরা সেই নির্দেশ মেনে অফিসে ফেরার বদলে গণ ইস্তফা দিতে শুরু করেন। কয়েকজন কর্মীর দাবি, খরচ কমাতেই সংস্থার তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামিদিনে আরও কর্মচারী ইস্তফা দিতে পারেন বলেই মত তাদের।
সংস্থার কর্মীদের দাবি, বাইজু সংস্থার হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রকে কিনে নেওয়া ও হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রের প্রতিষ্ঠাতা করণ বাজাজ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই সংস্থার অন্দরে একাধিক পরিবর্তন এসেছে। যতদিন অবধি করণ বাজাজের হাতে সংস্থার দেখভালের দায়িত্ব ছিল, ততদিন কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু ২০২১ সালের অগস্ট মাসে তিনি ইস্তফা দেওয়ার পরই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত।
অন্য়দিকে, সংস্থার তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, “ব্যাক টু অফিস কর্মসূচীর অধীনে আমাদের সেলস ও সাপোর্ট কর্মচারীদের গুরুগ্রাম ও মুম্বইয়ের অফিসে যোগ দিতে বলা হয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল থেকে কর্মচারীদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে, তবে মেডিক্যাল ও ব্যক্তিগত বিশেষ কোনও কারণ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তাদের স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য যাবতীয় সহযোগিতা করা হবে। যারা শিক্ষক পদে কাজ করেন, তারা বাড়ি থেকেই পড়াতে পারবেন।”
হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রের এই গণ ইস্তফা নতুন হলেও, কর্মীদের অফিসে ফিরতে অস্বীকার করার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে অ্য়াপেল সংস্থার তরফে কর্মচারীদের সপ্তাহে তিনদিন অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। সেই সময়ও সংস্থার কর্মীরা এই সিদ্ধান্তেরল বিরোধিতা করেন। চলতি মাসের শুরুতেই সংস্থার মেশিন লার্নিংয়ের ডিরেক্টর ইয়ান গুডফেলো ইস্তফা দেন। সম্প্রতি একটি সমীক্ষাতেও জানা গিয়েছে, করোনা পরবর্তী সময়ে ৭৬ শতাংশ কর্মীই অফিসে ফিরতে নারাজ। যারা কাজে যোগ দিয়েছেন, তারাও অখুশি।