নয়া দিল্লি: ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করল পাকিস্তান? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য এবং ওষুধপত্র নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার যে দুটি বিমান তুরস্কে পাঠানো হয়েছে, সেগুলিকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে ইসলামাবাদ। এই সম্পর্কে অবশ্য ভারত সরকার বা বায়ুসেনার পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, এর আগে কোভিড-১৯ মহামারির সময়, অন্যান্য দেশে চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর সময়ও ভারতীয় বিমানকে তাদের আকাশসীমায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি পাকিস্তান।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি), ৭.৮ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্থ হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ। পশ্চিম এশিয়ার ইতিহাসে এই ভূমিকম্প অন্যতম বিধ্বংসী ভূমিকম্প বলে মনে করা হচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে, ততই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা ৫০০০ ছড়িয়ে গিয়েছে। তবে, এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন। এই অবস্থায় বিপর্যস্ত তুরস্কের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে পাঠানো হয়েছে ওষুধপত্র, উদ্ধারকারী কুকুর, আধুনিক ড্রিল যন্ত্র ইত্যাদি। সোমবার রাতেই, বায়ুসেনার সবথেকে বড় মালবাহী বিমান, বোয়িং-এর তৈরি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানে করে প্রথম সহায়তা তুরস্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে আরও একটি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমান উড়ে গিয়েছে আদানা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।
পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে যেতে গেলে, ভারতীয় বিমানগুলিকে পাকিস্তানের আকাশ দিয়েই যেতে হয়। তবে, ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুসেনার এই দুটি মালবাহী বিমানকে তুরস্কে যেতে হয়েছে ঘুরপথে। কারণ ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে নাকি ভারতীয় বাহিনীকে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। এই খবর নিশ্চিত করতে না পারলেও, এর আগে ২০২১ সালে তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করার সময়, সেই দেশে সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রে, পাকিস্তানের উপর দিয়ে উড়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল ভারতকে। একই ঘটনা ঘটেছিল বন্দে ভারত মিশনের সময়ও। কোভিড মহামারির সময় ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে এনেছিল ভারত সরকার। সেই সময়ও ভারতীয় বিমানকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।