শ্রীনগর : ভারত – পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখায় নিকেশ এক পাকিস্তানি জওয়ান। ওই জওয়ানের দেহ ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানি সেনাকে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। শনিবার পাকিস্তানি ওই জওয়ান নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। সেই সময়েই তাকে নিকেশ করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়াড়ার কেরান সেক্টরে ওই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভারতীয় সেনার জিওসি ২৮ পদাতিক বাহিনীর মেজর জেনারেল এ এস পেনধরকর জানিয়েছেন, “কেরান সেক্টরে গতকাল পাকিস্তানি সেনার বর্ডার অ্যাকশন টিমের তরফে একটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় জওয়ানদের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে সেই অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।”
একজন ঊর্ধ্বতন সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, যাকে নিকেশ করা হয়েছে তার নাম মহম্মদ শাবির মালিক। ওই ব্যক্তি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্ডার অ্যাকশন টিমের জওয়ান হতে পারে।
ভারতীয় সেনা এই সাফল্যের বিষয়ে মেজর জেনারেল পেনধরকর বলেন, অনুপ্রবেশের চেষ্টাটি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়েছিল। তিনি আরও বলেন, “ওই অনুপ্রবেশকারীকে নিকেশ করা হয়ে। তার থেকে একটি একে রাইফেল, গোলাবারুদ এবং সাতটি গ্রেনেড সহ দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় নজরদারি এখনও চলছে।”
তাঁর আরও বক্তব্য, “এটি স্পষ্ট করে যে পাকিস্তান ক্রমাগত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে একটি হটলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের নিহত ব্যক্তির দেহ ফিরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।”
মৃত ওই পাকিস্তানির থেকে পাওয়া জিনিসপত্রের অনুসন্ধানের সময় পাকিস্তানের নাগরিক পরিচয়পত্র এবং সেই দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দ্বারা জারি করা টিকা শংসাপত্র পাওয়া গিয়েছে। কার্ডের ছবিতে একজন পাক সশস্ত্র বাহিনীর ইউনিফর্ম পরা লোকটিকে দেখা গিয়েছে। মেজর জেনারেল আরও বলেন, এই সীমান্ত অনুপ্রবেশের চেষ্টা গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির “সম্পূর্ণ লঙ্ঘন”।
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন সেক্টরে গত আট মাসে মোট ২৪ জন পাকিস্তানি জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। যা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপের উপর পাকিস্তানের সমর্থন একইরকমভাবে অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ রেকর্ড অনুসারে, যে পাকিস্তানি জঙ্গিরা নিকেশ হয়েছে, তাদের মধ্যে আট জন জম্মু জোনে এবং ১৬ জন কাশ্মীর জোনে নিহত হয়েছে। নিহত জঙ্গিদের বিবরণ থেকে জানা গিয়েছে যে তারা সবাই পাকিস্তানের।
এই জঙ্গিরা শ্রীনগর, পুঞ্চ, পুলওয়ামা, রাজৌরি, অনন্তনাগ, বারামুল্লায় সেনা-পুলিশ যৌথ এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে এবং তাদের বেশিরভাগই হয় লস্কর বা জইশ গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। যদিও নিহত জঙ্গিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কোন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তা জানা যায়নি এখনও।