নয়া দিল্লি: ভোটের আবহেই শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন(Winter Session of Parliament)। একদিকে পুরনিগমের ভোটর ফল, অন্যদিকে গুজরাট-হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনের ফলাফল, এরইমাঝে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। এবারের অধিবেশনও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে কেন্দ্রের তরফে যেমন একাধিক বিল আনার পরিকল্পনা রয়েছে, তেমনই বিরোধীরা বেকারত্ব থেকে মূল্যবৃদ্ধি- একাধিক ইস্যুতে সরব হবে। আজ, ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। চলবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর অবধি। শীতকালীন অধিবেশনে মোট ১৭ দিন অধিবেশন হবে।
প্রত্যেক বছর নভেম্বর মাসে অধিবেশন শুরু হলেও, গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশ- দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের জন্যই এবারের সংসদের শীতকালীন এধিবেশন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ দিল্লির পুরনিগমের ভোটের ফল। আগামিকাল, ৮ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ হবে গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের। তারই আগে আজ থেকে শুরু হচ্ছে অধিবেশন। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফেও অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে একটি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
প্রত্যেকবারই সংসদের অধিবেশনের শুরুতে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার কথা বলা হলেও, সাংসদদের বিক্ষোভে উত্তাল হয় রাজ্যসভা ও লোকসভা। এবারের অধিবেশনে যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে না পড়তে হয়, তার জন্য অধিবেশন শুরুর আগেই রাজ্যসভার সদস্যদের জন্য আচরণ বিধি প্রকাশ করে রাজ্যসভার সচিবালয়। অধিবেশনে সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার না করার বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আচরণবিধিতে। উল্লেখ্য, গতবারও বাদল অধিবেশনের আগে সংসদে বিক্ষোভ, প্ল্যাকার্ড দেখানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যদিও সেই নিয়ম মানেননি বিরোধীরা।
সূত্রের খবর, এ বারের অধিবেশনে মোট ১৬টি বিল পাশ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। এই বিলগুলির মধ্যে অন্যতম হল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিল। দীর্ঘদিন ধরেই এই সংশোধনী বিল আনার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। সম্প্রতিই খসড়া বিলও প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও সমবায় সমিতির নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত বিল ও জাতীয় ডেন্টাল কমিশন গঠন সংক্রান্ত বিল পেশ করা হতে পারে।
জি ২০ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তৎপরতা সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে সংসদে সরব হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই সূত্রের খবর। একই ইস্যুতে সরব হতে পারে কংগ্রেস সহ বাকি বিরোধী দলগুলিও। সংসদে এবার দুর্নীতি নিয়ে চাপে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতিই নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরু পাচার-কয়লা পাচার কাণ্ডে দলের বড় বড় মাথার নাম জড়ানোয় যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
অন্যদিকে, হাত শিবিরের হাতিয়ার হিসাবে থাকছে এইমসে সাইবার হানা থেকে শুরু করে চিনা আগ্রাসনের মতো বিষয়। তবে সংসদে বিরোধী ঐক্যের ছবিটা কতটা মজবুত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা অবিজেপি দলগুলির বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাদল অধিবেশনের মতো শীতকালীন অধিবেশনেও কংগ্রেসের সংস্পর্শ এড়িয়েই পৃথকভাবে বিরোধিতা জারি রাখবে ঘাসফুল শিবির, বলে মনে করা হচ্ছে।