নয়া দিল্লি: সন্ন্যাস। মানে, ত্যাগ। সংসার, মোহ, লোভ এসবের উপরে উঠে পরমাত্মার আরাধনা বা তার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার পথ। এ পথ সহজ নয়। তবে সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য এবার সুযোগ এনে দিচ্ছে যোগপীঠ পতঞ্জলি। সম্প্রতি পতঞ্জলির তরফে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে সন্ন্যাসী হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে যে কেউ হতে পারবেন না। কম বয়সি শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের জন্য এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য নিজের নাম নথীভূক্ত (এনরোল) করতে হবে। আর নাম লেখানোর পূর্ব শর্ত দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়া। আর স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হলে তো কথাই নেই। যাঁরা যোগচর্চা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন শুধু তাঁরাই নন, এর পাশাপাশি দর্শন, বেদশাস্ত্র, সংস্কৃত ব্যকরণ ও সংস্কৃত সাহিত্য নিয়ে যাঁরা বি.এ বা এম.এ করেছেন তাঁরাও সুযোগ পাবেন।
এই রামনবমীর দিনে বাছাই করা এমন ১০০ জন ছেলে-মেয়েকে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সন্ন্যাস জীবনের সঙ্গে পরিচিতি করানো হবে। এমনই দাবি যোগপীঠ পতঞ্জলির। ২২ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ন’দিন ধরে চলবে এই অনুষ্ঠান। সংস্থার দাবি, এর মধ্য দিয়ে একজন ঋষির মতো ব্যক্তিত্ব তৈরি করে দেবে তারা। আর তার উদ্দেশ্য? হিন্দু সনাতন ধর্মকে ভারতের তথা বিশ্বের ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা এবং ভারতকে বিশ্বের সবথেকে ক্ষমতাশালী দেশে পরিণত করা। আর যাঁরা পরীক্ষা বা অন্য কোনও কারণে ওই সময়ে আসতে পারবেন না, তাঁদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা থাকছে। সংস্থার তরফে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেখানে ফোন করে নাম রেজিস্টার করে পরেও যে কোনও সময়ে যাওয়া যেতে পারে।
যোগপীঠ পতঞ্জলির খ্যাতি শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী যোগচর্চার প্রসারে পতঞ্জলি ও যোগগুরু বাবা রামদেবের পরিচিতিও সুবিদিত। বহু ভক্তের সমাগম হয় হরিদ্বারে পতঞ্জলির যোগপীঠে। তবে এবার সন্ন্যাসী হওয়ার ডাক দিয়ে, যোগপীঠ পতঞ্জলির এমন বিজ্ঞাপন নজর কেড়েছে অনেকেরই। এককালে শ্রীরামকৃষ্ণ বা বামাক্ষ্যাপার মতো সাধকদের দেখেছে বাংলা। স্বামী বিবেকানন্দ, যিনি গোটা বিশ্বের দরবারে ভারতকে তুলে ধরেছিলেন, তাঁর কথাও সকলে জানেন। দেশ জুড়ে অসংখ্য সংঘ-মিশনও কাজ করে সন্ন্যাসীদের নিয়েই। কিন্তু সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য এভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে নেওয়া এবং বিজ্ঞাপন প্রকাশ- এ সত্যই নজিরবিহীন।