নয়া দিল্লি: সোমবার (৮ মে), ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ফিল্মটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে পশ্চিমবঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফিল্মটি দেখানো হলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই, এই ফিল্মটির প্রদর্শনীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। তবে, এর আগেই এই ফিল্মটিকে শংসাপত্র দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত শুক্রবারই ফিল্মটি নিয়ে চলমান বিতর্কে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সিনেমাটি একটি সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সন্ত্রাসবাদের কুৎসিত সত্যিকে তুলে ধরেছে এবং সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনাকে ফাঁস করে দিয়েছে। এই চলচ্চিত্রের বিরোধিতা করে সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করছে কংগ্রেস, এমনই দাবি করেছেন তিনি।
ভোটমুখী কর্ণাটকের বেল্লারিতে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, “সন্ত্রাসবাদের উপর নির্মিত চলচ্চিত্রের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস। তারা সন্ত্রাসবাদীদের পক্ষ নিয়েছে। ভোট ব্যাঙ্কের জন্য সন্ত্রাসবাদকে ঢাল করেছে কংগ্রেস। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটি সমাজে, বিশেষ করে কেরলের মতো এক পরিশ্রমী, মেধাবী এবং বুদ্ধিজীবী মানুষের সুন্দর দেশে, সন্ত্রাসবাদের পরিণাম প্রকাশ করার চেষ্টা করেছে। কংগ্রেস পার্টি এখন ফিল্মটি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করছে। তারা শুধু বিভিন্ন জিনিস নিষিদ্ধ করতে এবং উন্নয়নকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করতে জানে। এমনকি আমার ‘জয় বজরংবলী’ উচ্চারণেও এই পার্টির সমস্যা আছে।”
সন্ত্রাসবাদের নয়া রূপকে তুলে ধরার জন্য ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটিরও ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “সন্ত্রাস এখন নতুন রূপ নিয়েছে। অস্ত্র ও বোমা ব্যবহারের পাশাপাশি তারা সমাজকে ভিতর থেকে ফাঁপা করে দিচ্ছে। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমা সন্ত্রাসবাদের এই নতুন মুখকে উন্মোচিত করেছে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সামনে মাথা ঝুঁকিয়েছিল কংগ্রেস। আমরা অনেক দিন ধরে হিংসার কারণে ভুগেছি এবং কংগ্রেস কখনই এই দেশকে সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। এই কংগ্রেস কি কর্ণাটককে রক্ষা করতে পারবে?”
এদিন, বঙ্গে ‘কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর অভিযোগ করেছেন ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতির কারণেই এই অন্যায় পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ। তিনি দাবি করেছেন, ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে বিরোধীরা দেশের মেয়েদের ভুল পথে ঠেলে দিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করে জানিয়েছেন, “এটা নাগরিক স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত।”