নয়া দিল্লি: তৈরি ‘বিকশিত ভারতে’র নীল নকশা। রবিবার (৩ মার্চ), ছিল আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শেষ আনুষ্ঠানিক বৈঠক। আর এই বৈঠকে ভোট নিয়ে কোনও আলোচনা নয়, হল ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ নথির উপর আলোচনা। ইংরাজিতে যাকে বলে ‘ব্রেইনস্টর্মিং’। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুই মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করেছে মোদী মন্ত্রিসভা। প্রথমটি, পরবর্তী ৫ বছরের জন্য একটি বিশদ কর্মপরিকল্পনা। দ্বিতীয়টি, আগামী মে মাসে নতুন সরকার গঠনের পরই যাতে দ্রুত পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করতে অবিলম্বে যে যে পদক্ষেপ করতে হবে, তার জন্য ১০০ দিনের একটি পৃথক পরিকল্পনা। সব মিলিয়ে, ক্ষমতায় ফেরার বিষয়ে মোদী সরকার কতটা আত্মবিশ্বাসী, তাই ধরা পড়ল মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে।
কী এই ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ নথি? স্বাধীনতার ১০০ বছরে, অর্থাৎ, ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশগুলির তালিকায় তুলে নিয়ে লক্ষ্য নিয়েছে মোদী সরকার। তবে, শুধু লক্ষ্য স্থির করলেই তো হবে না, তার জন্য চাই একটা সঠিক রোডম্যাপ বা নীল নকশা। সরকারি সূত্র বলছে, আর এই নীল নকশাই হল ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ নথি। যেখানে স্পষ্টভাবে জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি, আকাঙ্খা, লক্ষ্য এবং অ্যাকশন পয়েন্ট রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন, জীবনযাত্রার সহজতা, ব্যবসা করার সহজতা, পরিকাঠামোর উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
তবে, এই নথি ভোটের আগে আকাশ থেকে পড়েনি। এর পিছনে রয়েছে ২ বছরেরও বেশি সময়ের নিবিড় প্রস্তুতি। ২০২১-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৪-এর জানুয়ারি পর্যন্ত সকল কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলিতে, বিভিন্ন পর্যায়ে ২৭০০টিরও বেশি সভা, কর্মশালা এবং সেমিনার হয়েছে। হয়েছে। সমস্ত মন্ত্রক, রাজ্য সরকারগুলি, শিক্ষা জগত, শিল্প সংস্থা, সুশীল সমাজ, বৈজ্ঞানিক সংস্থা, যুব সমাজের মতো ১৫টি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা মাধ্যমে, তাদের ধারনা, পরামর্শ এবং সুপারিশগুলি সংগঠিত করেছে সরকার। ২০ লক্ষেরও বেশি তরুণের পরামর্শ পেয়েছে সরকার। এই সকল পরামর্শের ভিত্তিতে ৪৫০টি সুপারিশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই নথিতে।
গত মাসে, সংসদে ২০২৪ সালের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করার সময়, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার ২০৪৭ সালের মধ্যেই বিকশিত ভারতের স্বপ্নপূরণ করবে। সেই সময়, অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এর জন্য, এক ‘সবদিকে দক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সর্বব্যাপী’ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মডেল তৈরি করবে সরকার। এদিনের বৈঠক বলে দিচ্ছে, সেই লক্ষ্যে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে মোদী সরকার।