অযোধ্যা: সোমবার (২২ জানুয়ারি), অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে, নিজেকে শুদ্ধ করার জন্য ১১ দিনের এক বিশেষ আচার পালন করেন প্রধানমন্ত্রী, যাকে বলে ‘যম নিয়ম’। মাটিতে শুয়েছেন, মিথ্যা বলেননি এবং শুধু ডাবের জল খেয়ে এই ১১ দিন কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার অযোধ্যার সাধুরা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে তিনদিনের আচারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী মোদী, পুরো ১১ দিনই সেই আচার পালন করেছেন। এই সময়কালে, প্রধানমন্ত্রী রাম ও রামায়ণের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি ভারতীয় মন্দিরে ভ্রমণ করেন। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার (২০ জানুয়ারি), তিনি গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীর শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরে।
শ্রীরঙ্গমের এই বিখ্যাত মন্দিরে তাঁকে পূর্ণ কুম্ভ মর্যাদায় স্বাগত জানান মন্দিরের পুরোহিতরা। মন্দিরের প্রধান দেবতা, রঙ্গনাথর স্বামীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এক ঝুড়ি উপহার তুলে দিয়েছিলেন মন্দিরের পুরোহিতরা। এর মধ্যে ছিল বেশ কিছু শাড়ি-ধুতি এবং অন্যান্য সামগ্রী। তবে, ওই উপহার প্রধানমন্ত্রীর জন্য ছিল না। ঝুড়িতে ভরা উপহারগুলি ছিল অযোধ্যার রামলালার জন্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেই রামলালার জন্য সেই উপহারগুলি পাঠিয়েছিলেন শ্রী রঙ্গনাথস্বামী পুরোহিতরা। সোমবার অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর, রাম জন্মভূমি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে সেই উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বলা যেতে পারে, দুই মন্দিরের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করলেন তিনি।
গত শনিবার, শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরে প্রায় দুই ঘন্টা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রীরঙ্গম আন্দাবন আশ্রম বেদ পাঠশালার শিশুরা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বৈদিক মন্ত্রে স্বাগত জানায়। মন্দির পরিদর্শনের সময় তাঁর পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী ভেস্তি এবং অঙ্গবস্ত্রম। মন্দির চত্বরে ‘অন্ডাল’ নামের একটি হাতিকে খাওয়ান এবং তার কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। মন্দিরে তিনি তামিল কবি কাম্বান রচিত ‘কাম্বা রামায়ণ’এর শ্লোক শোনেন। রামায়ণের প্রাচীনতম সংস্করণগুলির মধ্যে অন্যতম এটি। কথিত আছে, শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরেই তাঁর রচিত রামায়ণ প্রথম পাঠ করেছিলেন কবি কাম্বান। সেই ঘটনার স্মরণে ‘কাম্বা রামায়ণ মন্তপম’ নামে এই মন্দিরে একটি মঞ্চও রয়েছে। সেই ঐতিহাসিক স্থানে বসেই কাম্বা রামায়ণ শোনেন মোদী। প্রসঙ্গত, তাঁর আগে আর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এই মন্দিরে পা রাখেননি। মোদী শুধু সেখাীনে গেলেনই না, তাদের উপহার পৌঁছে দিলেন রামলালার কাছে।