ইম্ফল: মণিপুরের স্কুলগুলিতে এখন চলছে ত্রাণ শিবির। ৩ মে থেকে শুরু হওয়া হিংসার এখনও অবসান ঘটেনি। শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ভিটে ছাড়া। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে, তাঁরা গিয়ে উঠেছেন বিভিন্ন স্কুলের ত্রাণশিবিরগুলিতে। সমস্যা হল, রাস্তাঘাটের যা অবস্থা, তাতে ত্রাণ শিবিরগুলিতেও সময় মতো খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী এসে পৌঁছচ্ছে না। এই অবস্থায়, সোমবার হিংসাধ্বস্ত মণিপুরের ত্রাণ শিবিরগুলিতে আটা এবং রান্নার গ্যাসের যাতে কোনও অভাব না হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার (২৬ জুন), মণিপুরের হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং বিভিন্ন দফতরের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও অংশ নেন এই বৈঠকে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তি ফেরানোর কী পরিকল্পনা করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সামনে তা তুলে ধরেন প্রশাসনিক কর্তারা।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মিশর সফর থেকে ফেরার পর উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার সকালেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে মণিপুরের সাম্প্রতিকতম অবস্থা সম্পর্কে তাঁকে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্য ও কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাহিনীগুলির প্রচেষ্টায় রাজ্যের হিংসা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলেই জানান অমিত শাহ। রবিবার বিকেলে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেন অমিত শাহ। বীরেন সিং জানিয়েছেন, মণিপুরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। অমিত শাহ তাঁকে এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ধীরে হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ১৩ জুন থেকে রাজ্যে আর কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
গত সপ্তাহে, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন অমিত শাহ। মোট আঠারোটি রাজনৈতিক দল সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিল। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির চারজন সাংসদ এবং মণিপুর ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। সেই বৈঠকে মণিপুরের হিংসার চরিত্র বদল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছিলেন, শুরুতে মণিপুরের প্রান্তিক এলাকাগুলিতেই হিংসা ছড়াচ্ছিল। তবে যতদিন যাচ্ছে ততই সেই হিংসা ইম্ফল উপত্যকার জেলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ক্রমে নাগরিক অস্থিরতায় পরিণত হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।