জয়পুর: রবিবার (৭ জানুয়ারি), রাজস্থানের জয়পুরে ডিরেক্টর জেনারেলস/ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ২০২৩-এর সর্বভারতীয় সম্মেলনে, ভারতীয় নৌসেনা এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’র ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি, স্ব-স্ব ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে নৌসেনা এবং ইসরোর বিজ্ঞানীরা। জয়পুরের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে এদিন সেই সাফল্যের কাহিনি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি, সোমালিয়া উপকূলের কাছে লাইবেরিয়ার এক পণ্যবাহী জাহাজ অপহরণ করেছিল জলদস্যুরা। সেই জাহাজে ১৫ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। অপহরমের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের সকলকে উদ্ধার করেছে নৌসেনা। ডিজিপিদের সম্মেলনে এই উদ্ধার অভিযানের উল্লেখ করে নৌসেনার সাফল্যকে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, “দুদিন আগে ভারতী নৌসেনাও খুবই সাহসী এক অভিযানে সফল হয়েছে। আরব সাগরে এক বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে বিপর্যয়ের খবর আসতেই উদ্ধার অভিযানে তৎপর হয়েছিল ভারতীয় নৌসেনা এবং মেরিন কমান্ডোরা। এই জাহাজে ২১ জন ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৫ জন ভারতীয়। ভারতের জলসীমা থেকে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার দূরে পৌছে ভারতীয় নৌসেনা তাঁদের সকলকে সঙ্কট থেকে মুক্তি দেয়। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন,. একটি ভিডিয়োতে উদ্ধার হওয়া ভারতীয়রা ভারত মাতা কি জয় বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।”
এরপর তিনি ইসরোর আদিত্য এল-১ অভিযানের সাফল্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। শনিবারই, ইসরোর আদিত্য এল-১ মহাকাশযান পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝের ‘লাগ্রাঞ্জ পয়েন্টে’ পৌঁছে গিয়েছে। মোদী বলেন, “আদিত্য এল-১ মহাকাশযান, নির্ধারিত সময়ে পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে তার গন্তব্যে পৌঁছেছে। ওই জায়গায় আদিত্য এল-১-এর সামনে শুধুই সূর্য থাকবে। আর আদিত্য এল-১-এর উপর পৃথিবী এবং চাঁদের ছায়া পড়বে না। এতে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানো আদিত্য এল-১-এর পক্ষে অত্যন্ত সহজ হবে। চন্দ্রযানের ঐতিহাসিক সাফল্যের মতোই এই অর্জন ভারতের সামর্থ, ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের সামর্থের আরও এক সুন্দর প্রদর্শন।”
৫ থেকে ৭ জানুয়ারি – তিনদিন ধরে ডিজিপিদের সর্বভারতীয় সম্মেলন চলেছে। সাইবার ক্রাইম, পুলিশিং প্রযুক্তি, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের চ্যালেঞ্জ, বামপন্থী চরমপন্থা, কারাগারের সংস্কার-সহ পুলিশি ব্যবস্থা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই তিন দিনে। সম্মেলনের আরেকটি মূল অ্যাজেন্ডা ছিল নতুন ফৌজদারি আইন বাস্তবায়নের রোড ম্যাপ নিয়ে আলোচনা। এছাড়া, এই সম্মেলনে এআই, ডিপফেক ইত্যাদির মতো নতুন প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ এবং সেগুলি মোকাবেলা করার উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ডিজিপি সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন। তাঁর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রীকেই এই সম্মেলন নিয়ে আগ্রহ দেখাতে দেখা যায়নি।