গুয়াহাটি: দেশের স্বাধীনতায় অসমবাসীদের অবদানের কথা ভোলেননি তিনি, তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম সমাবর্তন (18th Convocation of Tezpur University) অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তিনি বলেন, “আমাদের দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূরণ করতে চলেছে। অসমের অসংখ্য মানুষ দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, বহু মানুষ তাঁদের জীবন-যৌবন ত্যাগ করেছেন। এখন সময় এসেছে নতুন ভারতের। আপনাদের বাঁচতে হবে নতুন ভারতের জন্য, আত্মনির্ভর ভারতের জন্য।”
করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরে অনলাইনেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে। তিনি ছাড়াও অসমের রাজ্যপাল জগদীশ মুখি (Jagdish Mukhi), মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল (Sarbananda Sonowal) ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ডঃ রমেশ পোখরিয়াল (Ramesh Pokhriyal) অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে বলেন, “তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উন্নয়নের নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত। অসমের উন্নয়নেও তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা অনস্বীকার্য। কেন্দ্রও সবসময় নতুন কিছু করার লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের লক্ষ্যে বরাবর কাজ করেছে কেন্দ্র।”
Our nation is entering the 75th year of independence. Innumerable people of Assam had contributed towards freedom. Several people had sacrificed their lives, their youth. Now you have to live for New India, Aatmanirbhar India: PM Modi, at Convocation of Tezpur University, Assam pic.twitter.com/ghaBalzaTU
— ANI (@ANI) January 22, 2021
আত্মনির্ভরতার মন্ত্রে বিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানেও পড়ুয়াদের নিজেকে ও দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলার বার্তা দেন। তিনি বলেন, “আমাদের নদীর মত হওয়া উচিত। বহমানতা ও শেখা- এটাই জীবনের ধর্ম হওয়া উচিত। করোনাকালে আত্মনির্ভর ভারত একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে। প্রতিটি সমস্যার সঙ্গে লড়াই করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে দেশের। এর সবথেকে বড় উদাহরণ গাব্বায় ঐতিহাসিক জয়। ক্রিকেটের ময়দানে এই জয় আমাদের শিখিয়েছে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা। আমি মনে করি, সবসময় পজিটিভ থাকতে হবে। ঝুঁকি নিতে হবে, ব্যর্থতার ভয় থাকলে জীবনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: সাহস জোগাতে এ বার প্রধানমন্ত্রী, নিজের কেন্দ্রে টিকা দাতা ও গ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলবেন
এই বিষয়ে তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আপনারা নিজেও আত্মনির্ভরতার একটি প্রতিচ্ছবি। করোনার সময়ে আপনার কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও মেনে চলা দেশকে শক্তি জুগিয়েছে। সঠিক সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও আপোস না করার মাধ্যমেই ভারত আজ লড়াই করতে পেরেছে। মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিনের দৌলতে আজ ভারত শুধু নিজেকে নয়, বিশ্ব সুরক্ষার দায়িত্বও নিচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যমের এই তরান্বিতিকরণ দেশের ছোট থেকে বড়- প্রতিটি ঘরে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। ব্যাঙ্কিং থেকে শুরু করে ঘর তৈরি, মানুষের প্রাথমিক চাহিদাগুলি পূরণে সর্ববৃহৎ অভিযান শুরু হয়েছে ভারতে। উত্তর-পূর্ব ভারতও এই অভিযান থেকে বঞ্চিত নয়।”
শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমি চাই ভবিষ্যতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভার্চুয়াল হোক। এরফলে বিশ্বের যেকোনও প্রান্তের পড়ুয়ারা নিজেদের ইচ্ছেমতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে। দেশের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তথ্য বিশ্লেষক রূপে কাজ করবে। এরফলে বাড়বে কর্মসংস্থান। শিক্ষার পরিপূর্ণতা আসলে দেশের পরিপূর্ণতা।”
স্বাধীনতার ১০০ বছরে নতুন ভারত উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতার ১০০ বছর পূরণ হবে। আপনাদের এই ২৫ বছরের পরিশ্রম দেশের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কাজ করবে।”
আরও পড়ুন: মোদী-শাহের অসম সফরে কংগ্রেসের হাতিয়ার ২৪টি প্রশ্নবাণ, প্রতিবাদে প্রস্তুত ছাত্র সংগঠনও