নয়া দিল্লি: বৈঠক শেষে কখনও হাসি মুখে বাইডেনের সঙ্গে পোজ, কখনও আবার জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গেও গভীর আলোচনায় মগ্ন হলেন। এমনই কর্মব্যস্ততায় কাটল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টোকিয়ো সফর। কোয়াড সম্মেলনে যোগ দিতে দু’দিনের জন্য জাপানে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন ভোররাতে তিনি দিল্লিতে এসে পৌঁছন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কোয়াড সদস্য়দের সঙ্গে ফলদায়ক বৈঠক হয়েছে। মিলিত ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং তার সমাধানসূত্র খোঁজার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও টুইট করে জানিয়েছেন যে বৈশ্বিক উন্নতির জন্য একাধিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া কোয়াডের সদস্য দেশগুলির নেতাদের সঙ্গে সফল দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে।
Delhi | Prime Minister Narendra Modi arrives from Tokyo after participating in #QuadSummit2022 as part of his two-day tour in Japan.
(Source: DD) pic.twitter.com/yvLPRB8Qrm
— ANI (@ANI) May 24, 2022
কোয়াড অন্তর্ভুক্ত চার সদস্য দেশ, ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ পরিকাঠামো ব্যবস্থা তৈরির উপরে বিশেষ জোর দেন। করোনা সংক্রমণের কারণে একাধিক দেশের উপরে যে ঋণের বোঝা চেপেছে, তা নিয়েও আলোচনা করেন কোয়াড সদস্যরা।
Highlights from Japan. Have a look. pic.twitter.com/haYnljDnfx
— Narendra Modi (@narendramodi) May 24, 2022
করোনা সংক্রমণ– কোয়াড সম্মেলনের বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল করোনা সংক্রমণই। এই মারণ সংক্রমণের প্রভাবে গোটা বিশ্বে যে ৬০ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তা উল্লেখ করে রাষ্ট্রনেতারা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য় পরিকাঠামোকে আরও মজবুত করার উপরে বিশেষ জোর দেন। আর্থিক সাহায্য ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ভাইরাসের থেকে এক পা এগিয়ে থাকার শপথ নেওয়া হয়। করোনাকালে ভারত যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি চিনেরও কড়া সমালোচনা করেন।
চিনকে কড়া বার্তা– ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যেভাবে চিন আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, তা নিয়ে ফের একবার কোয়াড বৈঠক থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হয় ভারতের প্রতিবেশী দেশকে। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যদি শান্তি বিঘ্নিত করার বা অবস্থান বদলের কোনওরকম চেষ্টা করা হয়, তবে তার কড়া জবাব দেওয়া হবে বলেও জানানো হয় কোয়াড অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির তরফে।
আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ– কোয়াড সম্মেলনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চার সদস্য দেশই আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে যা রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি-তে উল্লেখ করা হয়েছে, তা মেনে চলবে বলে জানিয়েছে। একইসঙ্গে সামুদ্রিক নিয়ম-নীতিগুলিও কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ- কোয়াড নেতারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার জেরে ইউক্রেনে যে চরম মানবসঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা করেন। চার দেশের তরফে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যে, সকল দেশকেই আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে চলা উচিত এবং যাবতীয় বিভেদ মেটাতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথে চলা প্রয়োজন।