হিরোশিমা: আন্তর্জাতিক নানা প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে জি-৭ ও জি-২০র মিলিত উদ্যোগের কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। জি-৭ সামিটে (G-7 Summit) যোগ দিতে জাপান গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে জাপানের সংবাদপত্র ইয়েমিউরি শিমবুনে (Yomiuri Shimbun) দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী জি-৭ ও জি-২০ সদস্য দেশগুলির সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। উন্নয়নশীল ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলিকে যে আন্তর্জাতিক চ্য়ালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়, সে বিষয় নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে খাদ্য ও শক্তি সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত ঘটেছে, তার উল্লেখ করে জাপান ও সমমনস্ক দেশগুলির সহযোগিতার কথা বলেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে আন্তর্জাতিক নিয়ম বজায় রাখার কথা বলেন। সামরিক শক্তি নিয়ে আলোচনায় পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলেই জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী।
জাপানের সংবাদপত্র ইয়েমিউরি শিমবুনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক-
উত্তর: আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে জি-৭ ও জি-২০ সামিট অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। জি-২০ সভাপতি হিসাবে আমি হিরোশিমায় জি-৭ সামিটে গ্লোবাল সাউথের দৃষ্টিভঙ্গি ও গুরুত্ব তুলে ধরব। জলবায়ু পরিবর্তন, সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়া, আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা, শক্তি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, খাদ্য সুরক্ষা, শান্তি ও সুরক্ষার মতো আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলির সঙ্গে মোকাবিলার জন্য় জি-৭ ও জি-২০ সদস্য় দেশগুলির মিলিত সহযোগিতার প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় ভারত ও জাপানের মধ্যে বিশেষ কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
উত্তর: ভারত বরাবরই আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্য়মে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছে এবং অত্য়াবশ্যকীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে প্রভাবিত সাধারণ মানুষের ভাল থাকাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় রাশিয়ার সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকলেও, বরাবরই আন্তর্জাতিক আইন, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে ইউক্রেনের সঙ্কট সমাধানকে সমর্থন করে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জ ও তার বাইরেও গঠনমূলক অবদান রাখতে প্রস্তুত ভারত।
উত্তর: করোনা মহামারি, সরবরাহ চেইনে ব্য়াঘাত, সন্ত্রাসবাদ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে গোটা বিশ্ব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ভারত এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় এবং জাপান ও অন্য়ান্য অংশীদারি দেশগুলির সাহায্যে মানব-কেন্দ্রিক উন্নয়নের উপরে জোর দিয়েছে। মানবতার উন্নয়নে বিভিন্ন কণ্ঠের মাঝে সেতু হিসাবে কাজ করতে চায় ভারত।
উত্তর: ভারত সর্বদাই সার্বভৌমত্ব, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার সপক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে সামুদ্রিক সীমান্ত নিয়ে সমস্য়ার শান্তিপূর্ণ সমাধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দায়বদ্ধ ভারত। ভারত সফলভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল ও জল সীমান্তের জট সমাধান করেছে।