Guwahati High: ‘হিন্দি সিনেমাতেও হয় না’, বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙায় পুলিশকে ভর্ৎসনা আদালতের

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Nov 18, 2022 | 11:49 PM

Guwahati High Court slams Assam police: গত মে মাসে, অসমের নওগাঁ জেলার বাতাদরভা থানায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে, পাঁচজনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পুলিশ। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) এই পদক্ষেপের জন্য পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত।

Guwahati High: হিন্দি সিনেমাতেও হয় না, বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙায় পুলিশকে ভর্ৎসনা আদালতের
অসমের নওগাঁ জেলার বাতাদরভা থানায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পাঁচজনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পুলিশ

Follow Us

গুয়াহাটি: গত মে মাসে, অসমের নওগাঁ জেলার বাতাদরভা থানায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে, পাঁচজনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পুলিশ। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) এই মামলার শুনানি চলাকালীন, আইনি পদ্ধতিটি লঙ্ঘন করার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করল আদালত। প্রধান বিচারপতি আরএম ছায়ার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, “আমাকে এমন কোনও বিচারশাস্ত্র দেখান, যেখানে কোনও অপরাধের তদন্তের জন্য, কোনও আদেশ ছাড়াই পুলিশ বুলডোজার চালিয়ে কোনও ব্যক্তির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিতে পারে।”

পুলিশ প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এর জন্য আপনার অনুমতির প্রয়োজন। আপনি কোনও জেলার এসপি হতে পারেন, এমনকি আইজি, ডিআইজি বা সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষও হতে পারেন, কিন্তু আপনাকে আইনের সীমারেখা মেনে চলতে হবে। শুধুমাত্র তারা পুলিশ বিভাগের প্রধান বলেই কারোর বাড়ি ভাংচুর করতে পারে না। এর অনুমতি দিলে এদেশে আর কেউ নিরাপদ থাকবে না। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এক কর্তৃপক্ষ অন্য কর্তৃপক্ষের উপর বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। এসপির প্রতিনিধিত্ব করবে কে? আপনি কি বলেন? কোন আইন এটা করার অনুমতি দেয়? আদালতের পূর্বানুমতি ছাড়া, আপনি কারো বাড়িতে অনুসন্ধানও করতে পারবেন না।”

সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, তল্লাশির জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তাঁর সেই যুক্তি আদালতে ধোপে টেকেনি। বরং, পুলিশ সুপারের পদক্ষেপের সঙ্গে হিন্দি সিনেমার মিল রয়েছে বলে কটাক্ষ করে আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, “এখানে বারে আমার সীমিত কর্মজীবনে, আমি এমন কোনও পুলিশ অফিসারকে দেখিনি, যিনি সার্চ ওয়ারেন্টের মাধ্যমে বুলডোজার ব্যবহার করেছেন। আমি রোহিত শেঠির কোনও হিন্দি সিনেমাতেও এমনটা দেখিনি। আপনার এসপির এই গল্পটি পাঠান। রোহিত শেট্টি এটা নিয়ে একটা ফিল্ম বানাতে পারেন। এটা কী? এটা কি গ্যাং ওয়ার না পুলিশের অভিযান? গ্যাং ওয়ারে এমনটা হয়। এক গ্যাংয়ের লোক অপর গ্যাঙের কারোর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়।”

এর জবাবে সরকারি আইনজীবী বলতে যান, পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্য সেটা ছিল না। প্রধান বিচারপতি তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, “উদ্দেশ্য যা কিছু হতে পারে। এসপিকে এর জন্য অন্য উপায় খুঁজতে হবে। আইন ও শৃঙ্খলা – দুটি শব্দই একটিই উদ্দেশ্য নিয়ে একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়। আমরা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আছি। এটি আপনাকে বলাই যথেষ্ট। আপনার ডিজিও বোধহয় এটা জানেন না। এটি উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নজরে আনুন।”

এদিনের শুনানির শেষ পর্যায়ে, আদালত ফের একবার পুলিশি পদক্ষেপে পদ্ধতি অনুসরণ না করা এবং আদালতের অনুমতি না নেওয়ার জন্য হতাশা প্রকাশ করে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “আগামীকাল যদি কেউ জোর করে কোর্টরুমে ঢুকে পড়ে, পুলিশ কর্তৃপক্ষ তদন্তের আড়ালে কি আদালতের আসনগুলিও গুঁড়িয়ে দেবে? s’E কী ধরনের তদন্ত? আমি সিনেমাটির নাম ভুলে গিয়েছি, অজয় ​​দেবগন ছিলেন। তাকেও আদালতের আদেশ দেখাতে হয়েছিল। আপনার ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল। যেভাবে আপনি আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করেছেন সেটা সঠিক পদ্ধতি নয়। আপনি দয়া করে স্বরাষ্ট্র দফতরের উর্ধ্বতনদের এটা জানান। কোনো ব্যক্তি যে অপরাধই করুক না কেন, তার জন্য আপনি তাকে বিচারের আওতায় আনতে পারেন, কিন্তু আপনার এসপিকে তার বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কে দিয়েছে?” এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৩ ডিসেম্বর।

Next Article