শ্রীনগর: মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকালে ফের জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারালেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের এক কনস্টেবল। উপত্যকার পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা শ্রীনগরে ওই পুলিশ কর্মীর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়েছে তাঁর ৭ বছর বয়সী মেয়েও। জানা গিয়েছে, জঙ্গিরা তার বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করলেও, সে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাবাকে আঁকড়ে ধরে ছিল। তবে, এখন তার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে।
গুলিবিদ্ধ পুলিশ কর্মীর নাম সইফুল্লা কাদরি। তিনি অঞ্চরের সৌরা এলাকার বাসিন্দা। জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর, তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে দ্রুত সৌরার কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, চিকিৎসা চলাকালীন সইফুল্লার মৃত্যু হয়। তবে তাঁর মেয়ের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
কনস্টেবল সইফুল্লা কাদরির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কাশ্মীর রেঞ্জ পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল বিজয় কুমার। তিনি জানিয়েছেন, হামলার পর সন্ত্রাসবাদীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। আততায়ীদের ধরার জন্য ওই এলাকায় চিরুনি তল্লাসি চালানো হচ্ছে। সমস্ত নাকাতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের সনাক্ত করতে এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাও স্ক্যান করা হচ্ছে।
এই হামলার দায় নিয়েছে কাশ্মীরের স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা ‘টিআরএফ’ । ‘দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ হল কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবারই স্থানীয় শাখা সংগঠন। সোমবারই, শ্রীনগরে এক গোপন জঙ্গি ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়ে টিআরএফ-এর দুই ‘হাইব্রিড জঙ্গি’কে গ্রেফতার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। যে সকল ব্যক্তি সরাসরি কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নেই, কিন্তু প্রয়োজনে মাঝারি মাপের নাশকতা ঘটাতে সক্ষম, তাদেরকেই ‘হাইব্রিড জঙ্গি’ বলা হয়।
ওই অভিযানে গিয়ে, নিরাপত্তা বাহিনী আরও জানতে পেরেছে, উপত্যকায় গভীর ষড়যন্ত্রের ছক কষেছে লস্কর জঙ্গিরা। অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর পরিমাণে ছোট মাপের অস্ত্র এবং গোলাগুলি। জঙ্গিরা, সেইসব অস্ত্র ব্যবহার করে বেছে বেছে পন্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যা করে উপত্যকার ভয়ের পরিবেশ কায়েম করতে চাইছে। এর আগে টিআরএফ-এর পক্ষ থেকে অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
এদিনের ঘটনা নিয়ে, চলতি মাসে উপত্যকায় তৃতীয়বার পুলিশের উপর হামলা চালাল জঙ্গিরা। ৭ মে, অঞ্চর এলাকাতেই আইওয়া ব্রিজের কাছে এক মোটরবাইক আরোহী এক পুলিশকর্মীকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তার আগে ১৩ মে তারিখে পুলওয়ামা জেলাতেও আরও এক পুলিশ কর্মী জঙ্গি হামলার বলি হয়েছিলেন।