ভুবনেশ্বর: বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর), নিজ রাজ্য ওড়িশায় এসে পুরির জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তাঁর আগমনের জন্য সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত মন্দিরে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, রাষ্ট্রপতিকে দেখার জন্যই বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন মন্দির চত্বরে। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের চমকে দিয়ে বালাগান্ডি চকেই গাড়িবহর থামিয়ে দিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন রাষ্ট্রপতি। তারপর, প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা, একেবারে সাধারণ ভক্তদের মতোই পায়ে হেঁটে মন্দিরে যান তিনি। রাস্তার দুই ধারে অপেক্ষারত সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে হাত নাড়তে দেখা যায় তাঁকে।
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করতেন দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন মন্দিরে যাওয়ার পথে তাঁকে উৎকল হিন্দি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায়। এরপর মন্দিরের সিংহদ্বারে তাঁকে স্বাগত জানান মন্দিরের প্রধান মোহান্ত গজপতি মহারাজা দিব্য সিং দেব। দিব্য সিং দেব, রাষ্ট্রপতিকে একটি পটচিত্র উপহার দেন। রাষ্ট্রপতি তাঁকে ‘নমস্তে’ বলায় বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যান তিনি। দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে বলেন, “আপনি ভগবান জগন্নাথের প্রধান সেবাইত, আপনি একজন জীবন্ত দেবতা।” আর পাঁচজন সাধারণ ভক্তের মতোই তিনি সিংহদ্বারের সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে, পা ধুয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন তিনি।
জগন্নাথ মন্দির সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন, রাষ্ট্রপতি মুর্মুর কন্যা ইতিশ্রী এবং তাঁদের পারিবারিক পান্ডা, রাজরতন মহাপাত্র। তিনি জানিয়েছেন মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে প্রার্থনা করেন। ভগবানের উদ্দেশ্যে তিনি একটি প্রদীপ অর্ঘ দেন। ভগবান জগন্নাথকে একটি তুলসীর মালা, মহালক্ষ্মী মন্দিরে একটি পদ্মফুলের মালা এবং মা বিমলা মন্দিরে একটি গোলাপের মালা দেন।
#WATCH | People greet President Droupadi Murmu as she walks about 2km to seek the blessings of Lord Jagannath at the Puri Jagannath Temple, in Odisha.
(Source: President’s Office) pic.twitter.com/AF7XnpujlW
— ANI (@ANI) November 10, 2022
রাষ্ট্রপতি মুর্মু মন্দিরের রেজিস্টার বুকে লেখেন, “মন্দির চত্বরে চতুর্ধা মূর্তি ও অন্যান্য দেব-দেবীর দর্শন পেয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি। ভগবান জগন্নাথের কাছে প্রার্থনা করে একটি বিরল আনন্দ অনুভব করছি। তিনি ওড়িয়াদের প্রধান দেবতা। মহাপ্রভু হলেন আদিবাসীদের ‘দারু দেবতা’ (কাঠের তৈরি দেবতা) এবং সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর। আমি তাঁর কাছে সমগ্র মানব জাতির মঙ্গল কামনা করছি। ভগবান জগন্নাথের কৃপায় আমাদের দেশ সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে যাক, এই কামনাই করছি।”
পরে, রাজরতন মহাপাত্র জানান, এর আগে কাফন্সিলর, সাংসদ বা রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবে বহুবার জগন্নাথ মন্দির দর্শনে এসেছেন দ্রৌপদী মহাপাত্র। প্রতিবারই তাঁর সফরসঙ্গী হয়েছেন রাজরতন। তবে দ্রৌপদী মুর্মুকে, এইবারের মতো আধ্যাত্মিকতা এবং আবেগে ডুবে যেতে আগে কখনও দেখেননি।