নয়া দিল্লি: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে একেবারে শুরুতে উঠেছিল এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের নাম। তারপর আলোচিত হয়েছিল ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা এবং বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম। তাঁরা প্রত্যাখ্যান করার পরই, দৌড়ে এসেছেন যশবন্ত সিনহা। সেই দিক থেকে তিনি বিরোধীদের চতুর্থ পছন্দ। অন্যদিকে, দ্রৌপদী মুর্মু এনডিএ-র প্রথম এবং একমাত্র পছন্দ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে, এই রকম একটা আখ্যান প্রচার শুরু হয়েছে। তবে, সোমবার (২৭ জুন), রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে, এই আখ্যানকে উড়িয়ে দিলেন যশবন্ত সিনহা। সাফ জানালেন, যদি তিনি বিরোধীদের দশম পছন্দও হতেন, তাহলেও এই নির্বাচনে অংশ নিতে দ্বিধা করতেন না।
এদিন, রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো বিরোধী গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতাদের পাশে নিয়ে সংসদে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেন যশবন্ত সিনহা। এর কিছু পরে, নয়া দিল্লির সংবিধান ক্লাবে তিনি একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিরোধীদের চতুর্থ পছন্দ হওয়া নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন যশবন্ত। বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বলেন, ‘যে সকল বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমায় তাদের প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছে, আমি তাদের কাছে কৃতঙ্গ। বলা হচ্ছে আমি চতুর্থ পছন্দ। তবে, আমি বলতে চাই, আমি যদি দশম পছন্দও হতাম, তাহলেও তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করতাম। কারণ এটা একটা বড় লড়াই।’
গত ২১ জুন, আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে যশবন্ত সিনহার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। সবার আগে বিরোধী পদপ্রার্থী হিসাবে আলোচনায় ছিল শরদ পওয়ারের নাম। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে আলাদা করে কথাওস শুরু করেছিলেন। কিন্তু, পরে জানা যায়, পওয়ার এই ভোটে লড়তে রাজি নন। সূত্র মতে রাজনৈতিক জীবনের এই পর্যায়ে, পরাজয় নিশ্চিত এমন ভোটে লড়তে চাননি তিনি। এরপর বিরোধীরা প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ফারুক আবদুল্লাকে। তিনি জানিয়েছিলেন, বর্তমানে কেন্দ্রের শাসনে রয়েছে কাশ্মীর। সেই সরকারের মাথায় তিনি বসতে চান না। বরং, উপত্যকার রাজনীতিতে তাঁকে বেশি দরকার। এরপর গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে প্রস্তাব দেওয়া হলে, তিনিও অসম্মতি জানান। গোপালকৃষ্ণ বলেছিলেন, তাঁর থেকে কোনও যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে। যিনি দেশের সংবিধান রক্ষা করতে পারবেন।
যশবন্ত সিনহা দীর্ঘদিন বিজেপিতেই ছিলেন। তবে, নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিনি কঠোর সমালোচক। গত বছর তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার দিন সকালেই তিনি দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। নাম ঘোষণার পর তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে, মোদী সরকারের সংবিধান অবমাননা করা আটকাতে তিনি সমস্ত রকম পদক্ষেপ করবেন।