নয়া দিল্লি: দক্ষিণ এশিয়ার (South Asia) সবথেকে বড় জেল হিসাবে খ্যাতি রয়েছে তিহাড়ের (Tihar Jail)। এই জেলের অত্যাধুনকি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নজরদারির সিস্টেম দেশের অন্যান্য জেল কর্তৃপক্ষগুলির কাছে সর্বদাই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। দেশের অন্যান্য জেলে প্রায়শই জেল পালানোর ঘটনা ঘটলেও দুর্ভেদ্য তিহাড়ের বেড়াজাল পার করে পালানো একপ্রকার দুঃসাধ্য বলেই মনে করা হয়। প্রায় ৫০ বছরের ইতিহাস বলছে এখনও পর্যন্ত ৫টি জেল পালানোর ঘটনা ঘটেছে তিহাড়ে। ১৯৬৫ সালে ড্যানিয়েল ওয়ালকট নামে এক মার্কিন পাচারকারী প্রথম এই জেলের পাঁচিল টপকে পালাতে সক্ষম হন। জেল থেকে বের হওয়ার পর একটি পুলিশের গাড়িতে লুকিয়ে ছিল ড্যানিয়েল। তারপর সেখান থেকে সোজা বিমানবন্দর। তারপর দেশ ছেড়ে চম্পট।
এ ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল তিহাড়ের নিরাপত্তা নিয়ে। তবে ড্যানিয়েল ওয়ালকটের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ছিল তিহাড় কর্তৃপক্ষ। আরও কড়া হয়েছিল নিরাপত্তা বেষ্টনী। কিন্তু, পালায়নের সেই তো শুরু। এরপর ওই জেলা ঠাঁই হয় ২০টি খুনের সাজা প্রাপ্ত আসামী চার্লস সোবরাজের। তিনিও জেল ভেঙেছিলেন তিহাড়ের বজ্রআঁটুনি। ১৯৮৬ সালে নিজের জন্মদিনে নিরাপত্তারক্ষীদের মাদক মেশানো মিষ্টি খাইয়ে জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ধরেছিলেন ছদ্মবেশ। গায়ে চাপিয়েছিলেন পুলিশের উর্দি।
২০০৪ সালেও ঘটে একই ঘটনা
পরবর্তীকালে ২০ বছর পর ২০০৪ সালে সাংসদ ফুলনদেবীর হত্যাকারী শের সিং রানাও তিহার থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ ঘটনার এক বছর পর ফের জেল পালানোর ঘটনা ঘটে তিহাড়ে। ২৩ জন বন্দিকে জেল থেকে বের করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময়েই তাঁরা পালায়। যদিও পরবর্তীকাসে সকলকেই ধরে ফেলে পুলিশ। পরের ঘটনা ঘটে ২০১১ সালে। ওই বছরও বিচারাধীন দুই মাদক পাচারকারী আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় পালিয়ে যায়। বারবার বন্দি পালানোর ঘটনায় আরও কড়া নিরাপত্তার চাদড়ে মুড়ে ফেলা হয় তিহাড়কে। বন্দিদের সঙ্গে ভাষার মিল যাতে না হয় সে কারণে তিহাড়ে নিয়ে আসা হয়েছে দক্ষিণী পুলিশ কর্মীদের।
ঠিক কী ধরনের অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তিহাড়ে?
প্রসঙ্গত, তিহাড় জেলে রয়েছে অত্যাধুনিক কম্পিউটারাইজড বন্দি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (PMS), মোবাইল জ্যামার, এক্স-রে স্ক্যানার, মেটাল ডিটেক্টর এবং কুইক রিয়াকশন টিম। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা গিয়েছে এই তিহাড়ে ঠাঁই হয়েছে দেশের সব খ্যাতনামা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। এই জেলেই বর্তমানে রয়েছে অনুব্রত মণ্ডল, তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল, দিল্লি সরকারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, শিক্ষমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের মতো ব্যক্তিত্বরা।