Captain Amarinder Singh: দেশের শত্রুকে শাস্তি দেওয়া হাতেই পদ্মপতাকা তুলতে চলেছেন ক্যাপ্টেন

TV9 Bangla Digital | Edited By: অংশুমান গোস্বামী

Sep 19, 2022 | 4:08 PM

১৯৪২ সালের ১১ মার্চ পাতিয়ালায় জন্ম অমরিন্দর সিংয়ের। মহারাজা যাদিবিন্দ্রা সিং এবং মহারানি মহিন্দার কৌরের পুত্র তিনি। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি যোগ দেন জাতীয় ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে।

Captain Amarinder Singh: দেশের শত্রুকে শাস্তি দেওয়া হাতেই পদ্মপতাকা তুলতে চলেছেন ক্যাপ্টেন
ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং

Follow Us

পাতিয়ালা: তিনি ভারতীয় রাজনীতির ‘ক্যাপ্টেন’। রাজ পরিবারে জন্ম। বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। এর পর রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সাংসদ হন।  ২ বার মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছেন। এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর থেকেই অতীতের দাপটে ভাটা পড়েছে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের। ভোটের আগে কংগ্রেসের হাত ছেড়ে গড়েছিলেন নিজের দল। কিন্তু নির্বাচনে দাগ কাটতে পারেননি। উল্টে নিজেও হেরেছেন। এ বার তিনি পদ্মবনের শোভা বাড়াবেন। ৮০ বছর বয়সি অমরিন্দরের জীবন হরেক অভিজ্ঞতায় ভরপুর। বহু উত্থান পতনের সাক্ষী তিনি। জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তিনি নথিবদ্ধ করেছেন নিজের লেখা একাধিক বইয়ে।

১৯৪২ সালের ১১ মার্চ পাতিয়ালায় জন্ম অমরিন্দর সিংয়ের। মহারাজা যাদিবিন্দ্রা সিং এবং মহারানি মহিন্দার কৌরের পুত্র তিনি। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি যোগ দেন জাতীয় ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে। সেখান থেকে ১৯৬৩ সালে স্নাতক হন তিনি। তার পর যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। মাত্র দুবছর পর ১৯৬৫ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। কিন্তু সে বছরই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ লেগেছিল। সেই যুদ্ধ শুরু হতেই ফের সেনায় যোগ দেন এবং ওই যুদ্ধে অংশ নেন। শিখ রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ‘দ্য মনসুন ওয়ার: ইয়ং অফিসার্স রেমিনিস-১৯৬৫ ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ওয়ার’, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে তাঁর লেখা বই। শিখদের ইতিহাসের উপরেও একাধিক বই লিখেছেন তিনি।

ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রাজীবের আমন্ত্রণেই কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। ১৯৮০ সালে কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু ১৯৮৪ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে অপারেশন ব্লুস্টার ঘিরে। সে সময় সেনার কার্যকলাপের প্রতিবাদ করে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তখন তিনি যোগ দেন শিরোমণি আকালি দলে। ১৯৮৫ সালে পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেন। তালওয়ান্ডি আসন থেকে বিধায়কও হয়েছিলেন তিনি। হারিয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীকেই। ১৯৯২ সালে শিরোমণি আকালি দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীদের নিয়ে পৃথক দল গঠন করেন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে ফের কংগ্রেসে ফিরে আসেন তিনি। ১৯৯৯ সালে তাঁকে পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সেনাবাহিনীতে অমরিন্দর সিং

এর পর পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান মুখ হিসাবেই থেকেছেন ক্যাপ্টেন। ২০০২ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেতে কংগ্রেস। অমরিন্দর প্রথমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু সে বছর বিজেপি ও শিরোমণি আকালি দলের জোটের কাছে হেরে যায় কংগ্রেস। গদি হারান অমরিন্দর। ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত পঞ্জাব কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হেভিওয়েট নেতা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলীর বিরুদ্ধে দাঁড়ান তিনি। প্রায় এক লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন অমরিন্দর।

২০১৬ সালে লোকসভার সাংসদের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। ২০১৭ সালে পঞ্জাবে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায় কংগ্রেস। দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন ক্য়াপ্টেন অমরিন্দর সিং। ২০২১ সালে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এর পর নিজের দল গঠন করেন। সেই দলের নাম দেন পঞ্জাহ লোক কংগ্রেস। বিজেপি ও শিরোমণি আকালির সঙ্গে জোট করে ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটেও লড়েন অমরিন্দর। কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্য পাননি। উল্টে প্রথম বারের জন্য পঞ্জাবের ক্ষমতায় আসে আম আদমি পার্টি। পাতিয়ালা কেন্দ্র থেকে হেরে যান অমরিন্দরও। এর পর তিনি যোগ দিলেন বিজেপিতে। এবার পঞ্জাবের ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে পদ্মশিবির কতটা বিকশিত হয়, সে দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

Next Article