নয়া দিল্লি: ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ইজরায়েলের লৌহ গম্বুজ অর্থাৎ, ‘আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ সম্পর্কে সম্ভবত সকলের জানা হয়ে গিয়েছে। ৭ অক্টোবরের আগে পর্যন্ত এই অত্যাধুনিক রকেট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্ভেদ্য বলে মনে করা হত। কিন্তু, হামাস গোষ্ঠী মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৫,০০০ রকেট ছোড়ায়, এই ব্যবস্থা কিছুটা হলেও ব্যর্থ হয়। তবে, লৌহ গম্বুজ না থাকলে, ওইদিন ইজরায়েল আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়ত। এবার, ভারতও আয়রন ডোমের মতো নিজস্ব দূর-পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির পথে পা বাড়াচ্ছে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রোজেক্ট কুশ’। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও এই প্রকল্পের দায়িত্ব নিয়েছে। ২০২৮-২৯ সালের মধ্যেই এই ব্যবস্থা স্থাপনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
এলআর-এসএএম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
ভারতের এলআর-এসএএম, অর্থাৎ, লং-রেঞ্জ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেকটা আয়রন ডোমের মতোই কাজ করবে। স্টেলথ ফাইটার, যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইলের মতো, আকাশপথে আসা বিভিন্ন ধরণের হুমকি শনাক্ত করতে এবং তা নির্মূল করতে পারবে। ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করবে এই ব্যবস্থা। ভারতীয় বায়ুসেনা ইতিমধ্য়েই রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। তার মতোই ইন্টারসেপশন ক্ষমতা থাকবে এই দেশিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার।
প্রকল্প কুশ
প্রকল্প কুশের জন্য প্রায় ২১,৭০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। ডিআরডিও এবং বেসরকারি ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে য়াবে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা শাখার মতে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গঠনের পথে প্রকল্প কুশ এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হতে চলেছে। লৌহ গম্বুজের দেশি সংস্করণটি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে একলাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেবে। বিভিন্ন দূরত্বে প্রতিকূল শক্তিকে শনাক্ত করার ক্ষমতার জন্য এটিকে একটি বহুমুখী এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পদ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের জন্য প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তাগত উদ্বেগ রয়েছে প্রতিবেশি দেশ চিন এবং পাকিস্তানের থেকে। সীমান্ত এলাকায় এই ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর হবে বলে দাবি ডিআরডিও-র।