পুনে: একটা গ্রামের প্রায় সব যুবক ও মহিলারাই সেক্সটরশন অর্থাৎ, যৌনতার ফাঁদে ফেলে তোলা আদায়ের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত! গত ২৮ সেপ্টেম্বর, মহারাষ্ট্রের পুনেতে এক ১৯ বছর বয়সী যুবক এক বহুতলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। সেই ঘটনার তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছিল, এক অনলাইন জালিয়াত চক্রের শিকার হয়েছিলেন পুনের দত্তওয়ারি এলাকার ওই বাসিন্দা। জালিয়াতদের তিনি ৪,৫০০ টাকা পর্যন্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু, নিয়মিত অর্থের জন্য এই চাপ দেওয়া আর সহ্য করতে পারেননি তিনি। ঘটনার বিশদ তদন্ত করতে গিয়েই, রাজস্থানের আলওয়ার জেলায় এই অদ্ভুত গ্রামের সন্ধান পেয়েছে পুনে পুলিশ।
গ্রামটির নাম গোথ্রি গুরু গ্রাম। দত্তওয়ারি থানার সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর অভয় মহাজন জানিয়েছেন, আনওয়ার সুবান খান নামে ওই গ্রামের এক ২৯ বছরের যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই এই সেক্সটরশন চক্রের মাস্টারমাইন্ড বা মূল চক্রী বলে দাবি পুলিশের। তবে শুধু সে একাই নয়, পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের অধিকাংশ যুবক এবং মহিলাও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। সাইবার ক্রাইম শাখার মতে, চলতি বছরে অক্টোবর মাস পর্যন্ত পুনে শহরে সাইবার অপরাধীদের ব্ল্যাকমেলের মোট ১,৪৪৫টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক মামলার পিছনেই এই গোথ্রি গুরু গ্রামের সেক্সটরশন চক্রের হাত রয়েছে।
তারা জানিয়েছে, সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে পুরুষদের প্রেম ও যৌনতার ফাঁদে ফেলত। এর জন্য তারা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের ব্যবহার করত। মেসেজিং অ্যাপের ডিসপ্লে পিকচারের জায়গায় ওই মহিলাদের ছবি দেওয়া হত। যা দেখে আকৃষ্ট হতেন পুরুষরা, শুরু করতেন কথাবার্তা। ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পর, ওই পুরুষদের অশ্লীল ভিডিয়ো রেকর্ড করা হত। এরপরই শুরু হত ব্ল্যাকমেল করা। ওই অশ্লীল ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা বা তাঁদের পরিবার-পরিজনদের কাছে পাঠানোর হুমকি দিয়ে অর্থের জন্য চাপ দেওয়া হত।
এইভাবেই চলছিল এই চক্র। হয়রানি ও ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে পুরুষ ভুক্তভোগীরা সাইবার জালিয়াতদের অর্থ প্রদান করত। এই ধরনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এই অবস্থায় সাইবার অপরাধ শাখার পুলিশ জানিয়েছে, কোনও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে যদি কোনও মহিলার অত্যধিক বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেন, তখনই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বেশি বাড়ালে বিপদ হতে পারে।