ভুবনেশ্বর: দিন দুয়েক বাদেই রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে যাত্রা শুরু হবে জগন্নাথ দেব, বলরাম দেব ও সুভদ্রা দেবীর রথের। তবে ওড়িশায় রথযাত্রার থেকেও বেশি গুঞ্জন এখন অন্য একটি বিষয় নিয়ে। তা হল পুরীর মন্দির। আরও ভালভাবে বলতে গেলে, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার। ফের একবার পুরীর মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার খোলার কথা চলছে। কী আছে এই রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরে? কেনই বা এত রহস্য এই রত্ন ভাণ্ডার নিয়ে?
দেশের বড় বড় মন্দির ও জাগ্রত ধামগুলির মধ্যে অন্যতম হল ওড়িশার জগন্নাথ মন্দির। দীর্ঘদিন ধরেই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার খোলার কথা হচ্ছে। তার ভিতরে কী কী ধনসম্পদ রয়েছে, তার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এর জন্য নতুন বিজেপির সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি। ওড়িশা হাইকোর্টের নির্দেশেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের মার্চ মাসে ওড়িশার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সরকার রত্ন ভাণ্ডারে রাখা গহনা এবং পাত্রগুলির একটি তালিকা তৈরি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরিজিৎ পাসায়াতের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে হাইকোর্ট এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI) এর নির্দেশে ওড়িশা সরকার জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার খোলার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু চাবি হারিয়ে যাওয়ায় সেই রত্ন ভাণ্ডার খোলা যায়নি। তদন্ত করেও সেই হারানো চাবি সম্পর্কে কোনও তথ্য মেলেনি। এই নিয়ে সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনেও সুর চড়িয়েছিল বিজেপি।
জানা যায়, জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরে প্রায় ৮৬২ বছরের পুরনো ধন সম্পত্তি রয়েছে। কথিত আছে, জগন্নাথ মন্দিরের তিন দেবতা জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার যাবতীয় সোনা-গহনা এই রত্নভাণ্ডারে রাখা আছে। শুধু তাই নয়, মূল্যবান বাসনপত্রও রাখা আছে রত্ন ভাণ্ডারে। গত ৪০ বছর ধরে বন্ধ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার। তার ভিতরে কী রয়েছে, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।
কেউ কেউ দাবি করেন, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে রত্ন ভাণ্ডারে যা সম্পত্তি রয়েছে, তা দেশ তথা বিশ্বের কোনও মন্দিরে নেই। আবার কেউ কেউ বলেন, পুরীর রত্ন ভাণ্ডার পাহারা দিচ্ছে নাগরাজ। সেই কারণেই রত্ন ভাণ্ডারের দরজা বন্ধ থাকে। কেউ সাহসও দেখান না এই রত্ন ভাণ্ডার খোলার। কিন্তু আদতে কী রয়েছে এই রত্ন ভাণ্ডারে, তা জানা সম্ভব দরজা খোলার পরই।