ইনদওর: ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কর্মসূচি কংগ্রেসের নির্বাচনী ভাগ্য বদলাতে পারবে কি না, তা সময় বলবে। তবে, এই যাত্রা তাঁর ব্যক্তিত্বে উল্লেখযোগ্য কিছু বদল এনেছে বলে দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। গত রবিবারই মধ্য প্রদেশের ইনদওরে এসে পৌঁছেছে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’। ৭ সেপ্টেম্বর, তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে এই যাত্রা শুরু হয়েছিল। তারপর, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি ইতিমধ্যেই অতিক্রম করেছে এই যাত্রা। সোমবার (২৮ নভেম্বর), ইনদওরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। যাত্রার স্মরণীয় মুহূর্তগুলির কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, ধৈর্য বৃদ্ধি-সহ তাঁর মধ্যে অনেকগুলি ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
রাহুল বলেন, “প্রথমত আমার ধৈর্য অনেক বেড়ে গিয়েছে। যাত্রায় হাঁটার সময় যদি আপনি ব্যথা অনুভব করেন, তখন সেই ব্যথার সম্মুখীন হওয়া ছাড়া কোনও গতি থাকে না। আপনি মাঝপথে ছেড়ে চলে আসতে পারেন না। দ্বিতীয়ত, এখন আমি সহজে বিরক্ত হই না। আগে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই বিরক্ত হয়ে যেতাম। এখন আট ঘণ্টাতেও বিরক্তি আসে না। কেউ আমায় ধাক্কা গিয়ে, বা টানা-হেঁচড়া করলেও আমার উপর কোনও প্রভাব পড়ে না। তৃতীয়ত, অন্যদের কথা শোনার ক্ষমতাও অনেকটা বেড়েছে। কেউ যখন আমার কাছে এগিয়ে এসে কিছু বলেন, আমি তার কথা আগের থেকে অনেক বেশি শুনি। আমার মতে, এই সবগুলিই আমার জন্য খুব ভাল।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, যাত্রার শুরুতেই তিনি তাঁর হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেছিলেন। আগের একটা চোট থেকে সেই ব্যথা হয়েছিল। সেই অবস্থায় তিনি যাত্রায় অংশ নিতে পারবেন কি না, সেই বিষয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, যত সময় এগিয়েছে, তাঁর সেই ভয় কেটে গিয়েছে। ব্যথার কারণে না হাঁটার প্রশ্ন আর আসেইনি। যা কিছু তাঁকে ভুগিয়েছে, সবগুলির সঙ্গেই মানিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।
এই যাত্রার অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। তবে, সবথেকে স্মরণীয় হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, দক্ষিণী রাজ্যের এক ছোট্ট মেয়ের কথা। রাহুল গান্ধী বলেছেন, “ও আমার কাছে এসে আমার হাতে একটি চিঠি দিয়েছিল। সম্ভবত ওর বয়স ছিল ৬ বা ৭। ও চলে যাওয়ার পর আমি চিঠিটা পড়েছিলাম। সেখানে সে লিখেছে, মনে কোরো না যে তুমি একা হাঁটছ। আমিও তোমার সঙ্গে হাঁটছি। আমার বাবা-মা অনুমতি দেয় না বলে আমি এখানে-ওখানে যেতে পারি না। কিন্তু, আমি তোমার সঙ্গে হাঁটছি। এই রকম আমি আরও অনেক অভিজ্ঞতার কথা বলতে পারি। কিন্তু, এটাই সবার প্রথমে আমার মনে এল।”