বেঙ্গালুরু: ‘রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবেন’, বুধবার (৩ অগস্ট) এমনটাই বললেন কর্ণাটকের এক লিঙ্গায়ত মঠের এক মোহান্ত। তবে তাঁর মুখ থেকে কথাটি পড়তে না পড়তেই, তাঁকে থামিয়ে দিলেন মঠের প্রধান মোহান্ত। তিনিও রাহুলকে আশীর্বাদ করলেন বটে, তবে সঙ্গে জুড়ে দিলেন একটি সতর্কতাও। পরের বছরের মে মাস নাগাদই বিধানসভা নির্বাচন হবে কর্নাটকে। তার আগে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জেরবার প্রদেশ কংগ্রেস। এই অবস্থায়, দক্ষিণী রাজ্যে সফরে এসেছেন রাহুল গান্ধী। দলের মধ্য়ে ঐক্য স্থাপনের পাশাপাশি, নির্বাচনকে মাথায় রেখে জনসংযোগের কাজও করছেন তিনি।
সেই লক্ষ্যেই এদিন তিনি গিয়েছিলেন চিত্রদূর্গ জেলার শ্রী মুরুগরাজেন্দ্র মঠে। সেখানে হাভেরি হোসামঠ স্বামী নামে এক মোহান্ত রাহুল গান্ধীকে আশীর্বাদ করে বলেন, “রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবেন।” সূত্রের দাবি, তিনি এই কথা বলতেই তাঁকে থামিয়ে দেন মঠের প্রধান মোহান্ত শ্রী শিবমূর্তি মুরুগ শরনরু তাঁকে থামিয়ে দেন। এরপর প্রধান মোহান্ত বলেন, “যাঁরাই আমাদের মঠে আসেন, তাঁদের সকলের মঙ্গল কামনা করা হয়।” ‘প্রধানমন্ত্রী’ হওয়া বিষয়ে মন্তব্য থামিয়ে দিলেও রাহুল গান্ধীকে এদিন লিঙ্গ দিক্ষা দেন শিবমূর্তি মুরুগ শরনরু। কং নেতার হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় স্ফটিকের তৈরি ইষ্টলিঙ্গ। সাধারণত, লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের মানুষই এই আচার পালন করে।
Karnataka | Congress leader Rahul Gandhi received Linga Deeksha from Sri Murugha Math seer Dr Sri Shivamurthy Murugha Sharanaru, in Chitradurga.
Usually, people belonging to Lingayat community perform this ritual, by wearing an Ishtalinga made up of crystal. pic.twitter.com/X150AVMxoM
— ANI (@ANI) August 3, 2022
কর্নাটকের রাজনীতিতে লিঙ্গায়তদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। রাজ্যের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশই এই সম্প্রদায়ের মানুষ। সাধারণভাবে, এই সম্প্রদায়ের ভোট পেয়ে থাকে বিজেপি। ২০১৯ সালে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার উল্টে দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল। শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে। তিনি ছিলেন লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের। ২০২১ সালে তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বাসবরাজ বোম্মাইকে। তিনিও লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়েরই মানুষ। এই লিঙ্গায়তদের ভিতরেই কংগ্রেসের জমি গড়ার চেষ্টা করছেন রাহুল গান্ধী।
তবে, প্রদেশ কংগ্রেসের মধ্যেই এখন তীব্র ডামাডোল। ক্ষমতায় ফেরা অনেক দূরের বিষয়। কিন্তু, কে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হবেন, তাই নিয়ে এখন থেকেই চাপা উত্তেজনা রয়েছে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সিদ্দারামাইয়া এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চান। এই নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই রাহুল গান্ধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। তিনি দুই পক্ষকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যতই বিরোধ থাকুক, প্রকাশ্যে যাতে কেউ কোনও মন্তব্য না করেন, সেই বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
নেতৃত্ব নিয়ে এই দ্বন্দ্বের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ডিকে শিবকুমারও। দলে নেত-ত্ব বনিয়ে কওনও দ্বন্দ্ব নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, কারোর ব্যক্তিগত মতামতের কোনও গুরুত্ব নেই। নির্বাচনের পর যাঁরা নতুন বিধায়ক নির্বাচিত হবেন, তাঁরা এবং কংগ্রেস হাইকমান্ড মিলে নেতৃত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাহুল গান্ধী কংগ্রেস নেতাদেরকে কর্ণাটকে এবং কেন্দ্রে বিজেপির দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রচার করার আবেদন করেছেন।