নয়া দিল্লি: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, কবচ সিস্টেম বসানো হল না কেন? এরপর রাঙাপানি, সম্প্রতি চক্রধরপুর- পরপর দুর্ঘটনায় কবচ নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। রেলমন্ত্রী বারবার আশ্বাস দিলেও সম্প্রতি ফের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রেল মন্ত্রককে। কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ‘কবচ’ ব্যবস্থা? আর কতদিন লাগবে? বৃহস্পতিবার লোকসভায় এইসব প্রশ্নের উত্তর দিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সুরক্ষা নিয়ে কী কী ভাবা হয়েছে, সেগুলিও উল্লেখ করেছেন তিনি।
মমতার আমলে বসে ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে রেলে। বিশ্বের বেশিরভাগ বড় বড় স্টেশনে যা আগে থেকেই রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’ লাগানো হয়েছিল। তবে তাতে কোনও ‘সেফটি সার্টিফিকেশন ‘ ছিল না বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জানি, এই ক্ষেত্রে সেফটি সার্টিফিকেশন প্রয়োজন হয়। কিন্তু ট্রায়ালে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর মেলেনি সেই সেফটি সার্টিফিকেশন। ফলে ২০১২ সালে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
‘কবচ’ লাগাতে কেন এত দেরী?
অন্যদিকে, ‘কবচ’ সম্পর্কে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে ‘কবচ’ সিস্টেমের সার্টিফিকেশন মেলে। তিন বছর লেগে যায় ওই সার্টিফিকেশন পেতে। বিভিন্ন রকমের ট্রায়াল হয়, টেস্টিং হয় তার আগে। কোভিডের মধ্যেই ২০২২ সালে ৩০০০ কিমির প্রজেক্টে লাগানো হয় কবচ। রেলমন্ত্রী বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে। একদিকে মরুভূমি, একদিকে উপকূল। তাই সব জায়গায় আলাদাভাবে পরীক্ষা করতে হয়েছে।” অবশেষে চলতি বছরের ১৭ জুলাই ‘কবচ’ ৪.০ ভার্সান অনুমোদন পেয়েছে।
কবে লাগানো হবে কবচ?
আপাতত কবচ লাগানোর দায়িত্ব পেয়েছে তিন ম্য়ানুফ্য়াকচারার। ৮০০০ কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ারকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। ৬ বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘কবচ’ সিস্টেম সম্পর্কে শেখানো হচ্ছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। কিন্তু কবে লাগানো হবে ‘কবচ’? মন্ত্রী জানিয়েছেন, ৯০০০ কিমির টেন্ডার দেওয়া হয়ে গিয়েছে, কয়েক মাসের মধ্যেই ১০০০০ লোকোমোটিভে লাগানো হবে এই সিস্টেম। মন্ত্রী বলেন, “কবচ লাগানোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করব, যাতে দেশের সব রেল নেটওয়ার্কে লাগানো সম্ভব হয়।”
উল্লেখ্য, কবচ হল এমন একটি ব্যবস্থা, যাতে একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে এলে খবর চলে যাবে ট্রেনের চালকের কাছে। সিগনালিং ব্যবস্থায় সমস্যা থাকলেও ঘটবে না দুর্ঘটনা।