নয়া দিল্লি: বিরোধীদের লাগাতার হই-হট্টগোলের জেরে নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই মুলতুবি করে দিতে হল সংসদ (Parliament)। গত ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশন (Winter session of Parliament) আগামিকাল, ২৩ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, লাগাতার বিক্ষোভ-বিশৃঙ্খলার কারণে তা একদিন আগেই শেষ করে দিতে হল। অধিবেশনের শেষে বিবৃতি পেশ করতে গিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু (Venkaiah Naidu) বললেন, “প্রত্য়াশার থেকেও খারাপ ছিল রাজ্যসভার কর্মক্ষমতা।”
নিয়ম মাফিকই অধিবেশন শেষ করার আগে দুই কক্ষের প্রধানরাই গোটা অধিবেশনের সামগ্রিক মূল্যায়ন তুলে ধরেন। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, “যা প্রত্য়াশা করা হয়েছিল, তার থেকেও অনেক খারাপ ফল রাজ্যসভার। এর থেকে অনেক ভাল কাজ হতে পারত। আমাদের আত্মসমীক্ষা করা উচিত যে কোনখানে ভুল বা খামতি রয়ে গেল। নিয়মকানুন, পদ্ধতি ও ঘটনাবলীর অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “আজ শীতকালীন অধিবেশন শেষ হচ্ছে। আমি দুঃখের সঙ্গেই জানাচ্ছি যে রাজ্যসভায় যে পরিমাণ কাজের সম্ভাবনা ছিল, তার তুলনায় অনেক কমই কাজ হয়েছে। আমি সকলকেই অনুরোধ করছি আপনারা মিলিতভাবে এবং আলাদাভাবেও চিন্তাভাবনা ও আত্মসমীক্ষা করুন যে এই অধিবেশন আরও আলাদা ও ভাল হলে কী হত।”
এদিন তালিকাভুক্ত যাবতীয় নথি ও প্রতিবেদন পেশ করার পরই দুই কক্ষের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেওয়া হয়। সংসদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বুধবার অবধি মোট ১৮টি অধিবেশন হয়েছে রাজ্য়সভায়। মোট কাজের হার (Productivity) ছিল ৪৭.৯০ শতাংশ। বিগত চার বছরে যে ১২টি অধিবেশন হয়েছে, তার মধ্যে এই অধিবেশনেই কাজের হার সবথেকে কম।
অন্যদিকে, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা(Om birla)-ও জানান, চলতি অধিবেশনে মোট ১৮ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট নষ্ট হয়েছে কেবল বিক্ষোভ, হই-হট্টগোলের কারণেই। সংসদের নিম্নকক্ষের কাজের হার ছিল ২০৪ শতাংশ। শীতকালীন অধিবেশনে কী কী গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং পাশ করা হয়েছে, সেটিও উল্লেখ করেন ওম বিড়লা। তিনি বলেন, “এবারের অধিবেশনে ওমিক্রন পরিস্থিতি, আবহাওয়া পরিবর্তন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।”
এবারের অধিবেশনে যে গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পাশ করা হয়েছে, সেগুলি হল কৃষি আইন প্রত্য়াহার বিল, নির্বাচনী আইন সংশোধনী বিল, নারকোটিক্স সংশোধনী বিল ও বাঁধ সুরক্ষা বিল। রাজ্যসভায় মোট ১০টি বিল পাশ করা হয়েছে শীতকালীন অধিবেশনে।
অন্যদিকে, শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীরা যে ইস্যুগুলি নিয়ে সরব হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম বিষয়গুলি হল কৃষকদের এমএসপির গ্য়ারান্টি, মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, লখিমপুর খেরিতে কৃষকমৃত্য়ু ইত্যাদি। বাদল অধিবেশনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য রাজ্য়সভার ১২ জন সাংসদকে গোটা শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করায় সুর চড়ায় বিরোধীরা।
লখিমপুর ইস্যু নিয়েও গত সপ্তাহ থেকেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলের নাম লখিমপুর কাণ্ডে জড়ানোয় এবং সম্প্রতিই উত্তর প্রদেশ পুলিশের সিট কমিটির রিপোর্টে লখিমপুরে কৃষকমৃত্যুর ঘটনাকে পূর্ব পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করার পরই, বিরোধীরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সরব হন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: Kejriwal on TMC: দিদি-ভাইয়ের সম্পর্কে ফাটল! গোয়াতে তৃণমূল প্রতিযোগিতায় নেই, জানালেন কেজরীবাল