মুম্বই: রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়া হবে না দুই এনসিপি নেতা নবাব মালিক এবং অনিল দেশমুখ। বৃহস্পতিবার (৯ জুন), মুম্বইয়ের এক বিশেষ আদালত, তাদের একদিনের বিশেষ জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল। শুক্রবারই (১০ জুন), রাজ্যসভার নির্বাচন। মহারাষ্ট্রে দুই দশক পর ভোটাভুটি হবে রাজ্যসভা নির্বাচনে। ৬ আসনের মধ্যে ৫টি আসনের ফলাফল নিশ্চিত। ষষ্ঠ আসনটির জন্য জোর লড়াই বিজেপি আর মহা বিকাশ আগাড়ি জোটের মধ্যে। এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য়ই এনসিপির কারাবন্দি দুই বিধায়ক একদিনের জন্য জামিনের আবেদন করেছিলেন। বিশেষ আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দিলেও, দুই নেতার সামনেই হাইকোর্টে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকারের অন্যতম মন্ত্রী নওয়াব মালিককে এক অর্থ পাচার মামলায় গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। অন্যদিকে আরেক এনসিপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখও বর্তমানে এক অর্থ পাচারের অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন। রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য একদিনের জামিন চেয়ে নবাব মালিক আদালতকে বলেছিলেন, ‘আমি একজন নির্বাচিত বিধায়ক এবং রাজ্যসভায় একজন প্রতিনিধি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করাটা আমার কর্তব্য।’
গত দুই দশক রাজ্যসভার নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটির প্রয়োজন হয়নি। পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রার্থী বেছে নেওয়া হয়েছে। শাসক জোট মহা বিকাশ আগাড়ি জোটের পক্ষ থেকে মোট চারজন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এনসিপি টিকিট দিয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল প্যাটেলকে। কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন ইমরান প্রতাপগঢ়ি। আর শিবসেনা প্রার্থী করেছে সঞ্জয় রাউত এবং সঞ্জয় পওয়ারকে। রাজ্যসভায় যেতে গেলে একেকজন প্রার্থীর ৪২টি করে ভোট প্রয়োজন। মহা বিকাশ আগাড়ি জোটে, শিবসেনার রয়েছে ৫৭জন বিধায়ক, এনসিপির ৫৩ জন এবং কংগ্রেসের ৪৪ জন। ফলে তিন দলেরই একজন করে প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। তবে, শিবসেনার দ্বিতীয় প্রার্থী সঞ্জয় পওয়ারের জয় অনিশ্চিত।
গেরুয়া শিবির থেকে তিনজন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে – কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, অনিল বোন্দে এবং ধনঞ্জয় মহাদিক। বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ১০৬ জন। ফলে, তাদের দুই প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। ধনঞ্জয় মহাদিকের জয় নিয়ে সংশয় রয়েছে। শিবসেনার পক্ষ থেকে বিজেপিকে তৃতীয় প্রার্থী প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে, বিজেপির পক্ষ থেকে তা মানা হয়নি। ফলে বিজেপির ধনঞ্জয় মহাদিক এবং শিবসেনার সঞ্জয় পওয়ারের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর দারুণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নির্দল ও ছোট দলগুলির ২৯ জন বিধায়কের ভূমিকা। এই অবস্থায় রাজ্যে তৈরি হয়েছে টানটান উত্তেজনা। বিধায়ক কেনা বেচার হতে পারে, এই আশঙ্কায় শিবসেনা, বিজেপি, কংগ্রেস, এনসিপি – সকল দলই তাদের বিধায়কদের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেল-রিসর্টে রেখেছে। টানাটানি চলছে নির্দল বিধায়ক এবং ছোট দলগুলির বিধায়কদের নিয়ে।