মুম্বই: গোটা দেশ জুড়ে নেমেছে বর্ষা। বৃষ্টির জলে প্রাণের ছোঁয়া লেগেছে প্রকৃতিতে। এই সময় দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্থানে তৈরি হচ্ছে কিছু অনির্বচনীয় দৃশ্যও। এমনই এক অতি অদ্ভুত দৃশ্য ধরা পড়ল মহারাষ্ট্রের নানেঘাটে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে অন্যান্য সকল বস্তুর মতো, জলপ্রপাতের জলও সব সময় উপর থেকে নিচেই নেমে আসে। কিন্তু, নানেঘাটে দেখা গেল এর ব্যতিক্রম। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিয়োতে দেখা গেল, নানেঘাটের এক জলপ্রপাতের জল নিচে নামার বদলে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে।
নানেঘাট পাহাড় হল, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার কোঙ্কন উপকূল এবং দাক্ষিণাত্য মালভূমির জুন্নার শহরের মধ্যে অবস্থিত এক পার্বত্য গিরিপথ। এই গিরিপথেই, দুই পাহাড়ের মধ্যে এক জলপ্রপাতে এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। ভাইরাল ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, জলপ্রপাতটির জল নিচে না পড়ে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে মহারাষ্ট্রের অন্যান্য সকল স্থানের মতোই নানেঘাট এলাকাতেও প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়াও। সেই ঝোড়ো হাওয়াতেই জলপ্রপাতটির জলের ধারাকে প্রায় উড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিয়োতে আরও দেখা যাচ্ছে বর্ষায় পাহাড়টি একেবারে সবুজে সবুজে ঢেকে গিয়েছে। আর সেই সবুজের প্রেক্ষাপটে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ।
When the magnitude of wind speed is equal & opposite to the force of gravity. The water fall at its best during that stage in Naneghat of western ghats range.
Beauty of Monsoons. pic.twitter.com/lkMfR9uS3R— Susanta Nanda IFS (@susantananda3) July 10, 2022
রবিবার (১১ জুলাই), ভারতীয় বন পরিষেবা বিভাগের কর্তা সুশান্ত নন্দা টুইটারে ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘যখন বাতাসের গতি এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাত্রা সমান এবং বিপরীতমুখী হয়। সেই পর্যায়ে পশ্চিম ঘাট পর্বতমালর নানেঘাটে জলপ্রপাতটি দেখতে সবথেকে সুন্দর লাগে। এটাই বর্ষার সৌন্দর্য।’ বহু মানুষ ভিডিয়োটি লাইক করেছেন, শেয়ার করেছেন। বহু মানুষ এই মনোরম দৃশ্য দেখে তাঁদের মুগ্ধতা ব্যক্ত করেছেন। একজন তো বলেছেন, ‘পৃথিবীতে স্বর্গ নেমে এসেছে।’
মাধ্যাকর্ষণকে এড়িয়ে জলপ্রপাতের জল, নিচে না নেমে উপরে উঠে যাচ্ছে কী করে? অনেকেই এই বিরল ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একজন বলেছেন, ‘নিউটনের গতির প্রথম সূত্র অনুযায়ী, বাইরে থেকে কোনও বল প্রয়োগ না করা হলে, যে কোনও বস্তুর গতি একই অবস্থায় থাকে। জলের মাধ্যাকর্ষণকে অনুসরণ করার স্বাভাবিক প্রবণতার বিরুদ্ধে কাজ করছে প্রচণ্ড গতির বাতাস। দুটি শক্তির মাত্রা সমান এবং তাদের দিক বিপরীত।’ আরেকজন দাবি করেছেন, “বাতাসের গতি এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ভিন্নমাত্রিক, তাই তাদের তুলনা করা যায় না। এই ঘটনা ঘটেছে, বাতাসের গতিশক্তির কারণে। গতিশক্তিই ওই জলস্তম্ভকে ওজন শূন্য করে দিয়েছে।