জয়পুর: আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই ফের প্রকাশ্যে এল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব (Congress Infighting)। ফের কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট (Ashok Gehlot) ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটের (Sachin Pilot) মধ্যে। ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া কংগ্রেসের এই দুই নেতার অন্তর্কলহ বৃহস্পতিবার নতুন মোড় নেয়। একটি সাক্ষাৎকারে সচিন পাইলটকে “বিশ্বাসঘাতক” বলেই উল্লেখ করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট। তারই জবাব এবার দিলেন সচিন পাইলট। তিনি বলেন, “খারাপ কথা বলে ও কাদা ছোড়াছুড়ি করে কোনও লাভ হবে না।”
কংগ্রেসের দুই নেতা অশোক গেহলট ও সচিন পাইলটের দ্বন্দ্ব বর্তমানে কারোরই অজানা নয়। ২০২০ সালে এই অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই রাজস্থানে সরকার প্রায় ভাঙতে বসেছিল। গেহলটের সঙ্গে বিরোধের কারণেই উপমুখ্য়মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন সচিন পাইলট, হুমকি দেন দল ছাড়ারও। সেই সময় গান্ধী পরিবার কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দিলেও, দুই বছর পরও সেই টানাপোড়েন জারি রয়েছে। বৃহস্পতিবার এনডিটিভি-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অশোক গেহলট সচিন পাইলটকে “গদ্দার” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “একজন বিশ্বাসঘাতক কখনও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে না। হাইকম্যান্জ সচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে পারে না…একজন নেতা, যার হাতে ১০ জন বিধায়কও নেই, দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। ও (সচিন পাইলট) দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, ও বিশ্বাসঘাতক। দেশের ইতিহাসে এটাই হয়তো প্রথম, যেখানে দলের প্রেসিডেন্টই নিজেদের সরকার ভাঙার চেষ্টা করেছিল।”
অশোক গেহলটের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর চুপ করে থাকেননি সচিন পাইলটও। বৃহস্পতিবারই তিনি পাল্টা জবাবে বলেন, “গেহলটজি আমায় নিকাম্মা, নাকারা, গদ্দারের মতো অনেক নামেই ডেকেছেন। কিন্তু এই ধরনের ভাষা ব্যবহার আমার শিক্ষা নয়। আমার বিরুদ্ধে গেহলটজীর মন্তব্য শুনেছি। একজন নেতা, যিনি এত প্রবীণ, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং যাকে দল এত কিছু দিয়েছে, সেই অভিজ্ঞ নেতার এই ধরনের ভাষা ব্যবহার, এইধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
সচিন পাইলট আরও বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য করে কোনও লাভই নেই যেখানে আমাদের মিলিতভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আগেও অশোক গেহলটজি দীর্ঘ সময় ধরে আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ এনেছেন।”
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার বার্তা দিয়েও টঙ্কের সাংসদ বলেন, “রাহুল গান্ধীজি বর্তমানে ভারত জোড়ো যাত্রা করছেন। এই যাত্রাকে সফল করতে আমাদের সকলের মিলিত হওয়া প্রয়োজন। বিজেপিকে একমাত্র চ্যালেঞ্জ করতে পারে কংগ্রেসই। সমস্ত রাজ্যে আমাদের বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। আমি যখন দলের সভাপতি ছিলাম, তখন বিজেপি রাজস্থানে অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল। তারপরও কংগ্রেস সভাপতি অশোক গেহলটকেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। কীভাবে রাজস্থানের নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হওয়া যায়, সেটাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত আজ।”