Hijab Case: ‘হিজাব সাংস্কৃতিক অধিকার, সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত’, সুপ্রিম কোর্টে জোরালো যুক্তি সিব্বলের

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Sep 16, 2022 | 3:54 AM

Hijab case at Supreme Court: হিজাব পরা সাংস্কৃতিক অধিকার, সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টে হিজাব মামলার শুনানিতে জোরালো যুক্তি দিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল।

Hijab Case: হিজাব সাংস্কৃতিক অধিকার, সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত,  সুপ্রিম কোর্টে জোরালো যুক্তি সিব্বলের
আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, হিজাব নিষিদ্ধ করা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯ লঙ্ঘনকারী

Follow Us

নয়া দিল্লি: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে কর্নাটক হাইকোর্ট বলেছিল, মহিলাদের হিজাব পরা ইসলামের অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন পোশাক বিধি জারি করা হলে, আবেদনকারীদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয় না। বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টে হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, হিজাব নিষিদ্ধ করা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯ লঙ্ঘনকারী। শুধু তাই নয়, তিনি আরও দাবি করেছেন, এই সমস্যাটি শুধু অনুচ্ছেদ ২৯-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সমস্যাটি ‘যোগ্য সরকারি স্থান’-এর ধারণার সঙ্গেও সম্পর্কিত। এই কারণে মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে স্থানান্তর করার আবেদন করেন কপিল সিব্বল।

হিজাব পরার অধিকার চেয়ে এবং কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মোট ২৩টি আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সেই আবেদনগুলির ভিত্তিতেই এই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে। কপিল সিব্বল
জানান, পোশাক কোনও ব্যক্তির অভিব্যক্তি। নিজের শরীরের উপর তার অধিকারের সঙ্গে জড়িত। যদি কোনও সরকারি জায়গায় সেই অধিকার থাকে, তাহলে স্কুলের দরজা টপকালেই সেই অধিকার কীকরে শেষ হয়ে যায়? সংবিধানে এমনটা বলা নেই।

তিনি আরও যুক্তি দেন, হিজাব পরা একজনের ব্যক্তিগত মর্যাদা এবং পরিচয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। মুসলিম মেয়েরা অনেক ছোটবেলা থেকে হিজাব পরা শুরু করে। সেটা তাদের ব্যক্তিত্বের অংশ হয়ে যায়। এটি তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বাহক। কারোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহনের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। যদি কোনও পোশাক জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতাকে প্রভাবিত করে, সংবিধান অনুযায়ী সেই পোশাক বন্ধ করা যায়। এই ক্ষেত্রে ছাত্রীরা স্কুলের পোশাক বিধি মেনেই পোশাক পরছেন। তার সঙ্গে আরও কিছু পরছেন, যা তার সংস্কৃতির প্রতিফলক। জনশৃঙ্খলার কথা বলে হিজাব পরার অধিকার খর্ব করা যায় না। কারণ, কর্নাটকের রাজ্যের জন্মের পর থেকেই মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরছেন এবং সেখানে এই নিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।

বিচারপতি ধুলিয়া জানান, হিজাব পরার পাল্টা একাংশের শিক্ষার্থীরা গেরুয়া শাল পরতে শুরু করেছিল। এই নয়া আদেশ জারি করা হয়েছে সেই প্রেক্ষাপটেই। কপিল সিব্বল জানান, গেরুয়া শাল পরে ওই শিক্ষার্থীকা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল, যেখানে রাজ্য এরকম একটি পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু, কেউ তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করতে চাইলে, কারোর আপত্তি জানানোর অধিকার নেই। সিব্বল আরও জানান, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯ অনুযায়ী সকলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহনের অধিকার রয়েছে।

এর আগে কর্নাটক হাইকোর্টে এই মামলা বিচার করা হয়েছিল, শুধুমাত্র হিজাব পরা আবেদনকারীদের অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন কি না, তার ভিত্তিতে। এদিন আদালতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, এই যুক্তির উত্থাপনই অপ্রয়োজনীয়। এটি একটি ধর্মের পরিচায়ক হিসেবে পরিচিত। বছরের পর বছর ধরে, হিজাব এই ধর্মীয় পরিচয় বহন করছে। বেশ কিছু মহিলা হিজাব পরেন, তাদের কাছে এটা একটি সত্যবাদী অভ্যাস। এই যুক্তিতেই হিজাব নিষিদ্ধ করা যায় না। কোনও ধর্মীয় অনুশীলন যদি জনশৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য বা নৈতিকতার বিরোধী হয় তবেই তা নিষিদ্ধ করা যায়। হিজাব এই তিন বিষয়ের কোনওটির বিরোধী নয়।

তিনি আরও জানান, পাগড়ির মতো অন্যান্য ধর্মীয় পোশাক পরার অনুমতি রয়েছে। শুধুমাত্র হিজাবকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই এই আদেশ বৈষম্যমূলকও বটে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি ধর্মীয় চিহ্নিতকারী পোশাক নিষিদ্ধ করতে হয়, তাহলে সমস্ত ধর্মীয় অভিব্যক্তিকেই নিষিদ্ধ করা উচিত।

Next Article