নয়া দিল্লি: বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই বা আয়কর বিভাগের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধীরা এই অভিযোগ করে থাকেন। বিরোধীদের এই অভিযোগের আগুনে এক প্রকার ঘি ঢালার কাজ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি। বৃহস্পতিবার (৩ অগস্ট), লোকসভায় দিল্লি পরিষেবা বিল পাস হয়েছে। তার আগে এই বিলের বিষয়ে বিস্তৃত বিতর্ক হয়। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের জোট গুলি একযোগে এই বিলের বিরোধিতা করে। মীনাক্ষী লেখি যখন এই বিলের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন, সেই সময়ও বিরোধীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। সেই সময় বিরোধীদের চুপ করতে বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অন্যথায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তাদের বাড়িতেও হানা দেবে বলে বিরোধী সাংসদদের সতর্ক করেন তিনি।
মীনাক্ষী লেখি বক্তব্য রাখার সময়, এক বিরোধী সাংসদ বারবার বাধা দিচ্ছিলেন। সেই সময় ওই সাংসদকে উদ্দেশ্য করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “এক মিনিট, এক মিনিট। চুপ করুন, নাহলে আপনার বাড়িতেও ইডি হানা দিতে পারে।” এরপর ফের আলোচনায় ফিরে যান মীনাক্ষী লেখি। তবে, লোকসভার অন্দরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য একেবারেই ভালভাবে নেননি বিরোধী সাংসদরা। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অপব্যবহার করার যে অভিযোগ তাঁরা করে থাকেন, তাকেই মান্যতা দিয়েছে মীনাক্ষী লেখির এই মন্তব্য।
এনসিপি-র মুখপাত্র ক্লাইড ক্র্যাস্টো বলেছেন, লোকসভায় লেখির এই প্রচ্ছন্ন হুমকি বিরোধীদের অভিযোগকেই সত্যি প্রমাণ করেছে। তিনি এক্স করেছেন, “অনেকেই বলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। লোকসভায় রাগের মাথায় মীনাক্ষী লেখির দেওয়া প্রচ্ছন্ন হুমকি, সেটাই প্রমাণ করল।” ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি শ্রীনিবাস বিভি প্রশ্ন তুলেছেন, এটা সতর্কতা, না হুমকি? নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি হিন্দিতে লিখেছেন, “এটা কি সতর্কতা নাকি হুমকি?” মীনাক্ষী লেখির এই মন্তব্য ‘বিস্ময়কর’ বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। তিনি বলেছেন, “আজ সংসদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি বিস্ময়করভাবে বিরোধীদের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চুপ করে থাকুন, নাহলে ইডি আপনার ঘরে হানা দিতে পারে। শুধুমাত্র সংসদে মুখ খোলার জন্য বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে এখন ইডিকে ব্যবহার করার খোলাখুলি হুমকি দিচ্ছেন বিজেপির মন্ত্রীরা। প্রতিহিংসার রাদনীতি এখন আর গোপন থাকছে না।”
শুধু ইন্ডিয়া জোটের দলগুলিই নয়, মীনাক্ষী লেখির এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে জোটের বাইরে থাকা দল, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর-এর ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ‘লজ্জাজনক’ বলেছে তারা। প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়া বা এনডিএ – এখনও পর্যন্ত কোনও জোটেই নেই বিআরএস। তবে, দিল্লি রাজধানী এলাকা সরকার (সংশোধনী) বিল ২০২৩-কে আটকাতে, রাজ্যসভায় এর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য দলীয় সাংসদেদর উপর হুইপ জারি করেছে বিআরএস-ও।