আহমেদাবাদ: ভারতকে বিশ্বগুরুর করার লক্ষ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর ভারত কীভাবে বিশ্বগুরু হতে পারে, তার পথ বাতলালেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। রবিবার (২৩ এপ্রিল) গুজরাটের সবরকাঁথা জেলার মুদেটি গ্রামে ‘শ্রী ভগবান যাগবল্ক্য বেদতত্ত্বজ্ঞান যোগাশ্রম ট্রাস্টে’র আয়োজিত ‘বেদ সংস্কৃত জ্ঞান গৌরব সমরম্ভ’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মোহন ভাগবৎ জানান, ভারতের উচিত বেদের জ্ঞান এবং সংস্কৃত ভাষার চর্চা করা। তিনি আরও জানান, ভারতীয় সংস্কৃতি মোটেই রক্ষণশীল নয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর পরিবর্তন হয়েছে। বেদের মূল্যবোধেই ভারত রাষ্ট্রের গঠন হয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তা অনুসরণ করে চলেছে।
আরএসএস প্রধানের মতে, ভারত আজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিতে পরিণত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই দেশ কোনওদিনই আমেরিকা, চিন বা রাশিয়ার মতো সুপারপাওয়ার হবে না। এই দেশগুলি শক্তি প্রদর্শনে বিশ্বাসী। মোহন ভাগবত বলেন, “আমাদের এমন এক দেশ হয়ে উঠতে হবে, যার কাছে বর্তমান বিশ্বের সব সমস্যার জবাব থাকবে। আমাদের এমন এক দেশ হতে হবে, যারা বিশ্বকে শান্তি, প্রেম এবং সম্বৃদ্ধির পথ দেখাবে।” তিনি আরও জানান, ভারত এমন একটি দেশ যা ‘ধর্ম’ প্রচারে বিশ্বাস করে, সবাইকে একত্রিত করে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাছে জয় মানে ধর্মের বিজয়”।
আর এর জন্যই বেদের জ্ঞান, বেদ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির চর্চা প্রয়োজন, এমনটাই মনে করেন মোহন ভাগবত। তিনি বলেন, “সমস্ত জ্ঞানই রয়েছে সংস্কৃত ভাষায়। তাই সংস্কৃতের প্রভাব থাকবেই। আমরা যদি আমাদের মাতৃভাষা ভাল করে শিখি, তাহলেই আমরা ৪০ শতাংশ সংস্কৃত শিখতে পারব।” ভাগবৎ আরও জানান, বিশেষজ্ঞদের মতে সংস্কৃত এবং গান-বাজনার জ্ঞান থাকলে, বিজ্ঞান এবং গণিতের বহু ধারণাই সহজে শেখা যায়।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে যখন গোটা বিশ্ব কোনও না কোনও পক্ষকে সমর্থন করছে, ভারত সেখানে দুই দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। ভারতের এই অবস্থানের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন আরএসএস প্রধান। তিনি বলেছেন, “দুই দেশই ভারতকে তাদের পক্ষে চেয়েছে। কিন্তু ভারত দুই দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে। ভারত সাফ জানিয়েছে, এটা যুদ্ধের সময় নয়, তাই যুদ্ধ বন্ধ কর। আজ বিশ্বের সুপারপাওয়ারদের এই কথা বলার শক্তি আছে ভারতের। আগে এটা ছিল না।” তিনি আরও জানান, ভারত ধর্মে বিশ্বাস করে বলেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা নিতে চায় না। বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত চেষ্টা করে যাতে দুই দেশ পরস্পর পরস্পরের সুবিধা করে দিতে পারে। মোহন ভাগবত বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ধর্ম রক্ষণশীল নয়। সময়ের সঙ্গে বদলেছে। আমাদের সংস্কৃতি আমরা কী খাব, কী খাব না, তা বলে দেয় না। তবে, আমাদের সংস্কৃতি আমাদের বলে যে কোন খাবার খেলে শরীর খারাপ হতে পারে।”